কলকাতা : “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”। সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘হে মহাজীবন’ কবিতার লাইনই যেন এখন আন্দোলনকারীদের জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে দেখা দিচ্ছে। চোখের সামনে ঝুলছে রুটি। কিন্তু, পেটে খিদের জ্বালা। ধর্মতলায় ধরনাতলায় আজ ৭৩০ দিন ধরে চাকরির দাবিতে চলছে আন্দোলন। এদিন সেখানেই অভিনব প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা গেল এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের। হাত বাঁধা শিকলে। সামনে ঝুলছে ঝলসানো রুটি। দিকে দিকে প্রতিবাদী পোস্টার। চাকরিপ্রার্থীদের সাফ দাবি, সরকারের তরফে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি মিললেও দিনের শেষে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মেলেনি চাকরি। আর সে কারণেই আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হয়েছে তাঁরা।
এদিন সরকাররে বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করে এক চাকরি প্রার্থী বলেন, “আজ ২ বছর হতে চলল আমরা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে রয়েছি। কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য সেটা বারবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তারপরেও সরকার কোথাও একটা নিজের দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছে। কেন এটা করছে বুঝতে পারছি না। সরকারের নির্লিজ্জ, অমানবিক দিকটা বারবার ফুটে উঠছে। আমাদের পেটে লাথি মারা হয়েছে। শেষবেলায় এখন আমাদের কাছে এই ঝলসানো রুটিটুকুই যেন সম্বল ক্ষুধা মেটানোর জন্য। আমরা যোগ্যপ্রার্থী হওয়ার পরেও কার্যত যেন আমাদের শিকলে বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সে কারণেই আমাদের এই প্রতিবাদ।”
ক্ষোভ প্রকাশ করেন আর এক চাকরিপ্রার্থীও। তাঁরও গলায় একই সুর। সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “আমরা বারবার আশ্বাস পেয়েছি, প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু, কোনওটাই পূরণ হয়নি। আমারা চাই যত দ্রুত সম্ভব আমাদের যোগ্য স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। আশ্বাস যা দেওয়া হচ্ছে তা বাস্তাবে পরিণত করা হয়। আমাদের বর্তমান অবস্থা দেখাতেই ঝলসানো রুটি নিয়ে আমাদের প্রতিবাদ।”