Body Recover: হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাথরুমে পড়ে ব্যবসায়ী তৃণমূল কর্মীর নিথর দেহ, মৃত্যুর কারণ শুনে স্তম্ভিত প্রতিবেশীরা
Baguiati: অভিযুক্ত করণ বিশ্বাস ও মনোহরণ মণ্ডল জগদীশ মল্লিকের দুই মেয়ের ছেলে । সম্পত্তি নিয়ে দাদুর সঙ্গে বেশ কিছুদিন থেকে টানাপোড়েন চলছিল।
বাগুইআটি: সম্পত্তির লোভে দাদুকে খুনের (Murder) অভিযোগ দুই নাতির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বাগুইআটি থানা এলাকার অশ্বিনীনগরের। মৃতের নাম জগদীশ মল্লিক (৭২)। শনিবার রাতে বাথরুম থেকে হাত, পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মাথায়ও আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই ঘটনায় জগদীশবাবুর এক নাতি করণ বিশ্বাস ওরফে বাবাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । বছর বাইশের এক নাতি মনোহরণ মণ্ডলকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দোতলার ঘরে ছিলেন পেশায় চাল ব্যবসায়ী জগদীশ। রাত সাড়ে এগারোটার পর তাঁর নাতি বাবাই এবং মনোহরণ বাড়িতে আসেন। জগদীশবাবুর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পত্তিগত বিষয় নিয়ে অশান্তি চরমে উঠেছিল বাবাইয়ের।
জগদীশবাবুর বাড়ির ভাড়াটে কবিতা নন্দী জানিয়েছেন, “আমার শাশুড়ি রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁর কাছে বাড়িভাড়া দিতে গিয়েছিলেন। তখনও ঘরে তিনি একাই ছিলেন। এরপর বারোটা কুড়ি নাগাদ জগদীশবাবুর চালের ব্যবসার একটি গাড়ি নিয়ে এক ব্যক্তি আসেন। তিনি অনেকক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আমাদের সাহায্য চান। আমরা গিয়ে ডাকাডাকি করতেই ঘরের ভিতর থেকে একটু অন্যরকম গলার আওয়াজ শুনতে পাই। তখন আমাকে চলে যেতে বলা হয়। এরপরই রাত একটা নাগাদ জোরে আওয়াজ শুনে আমরা ছুটে যাই। পরে জগদীশবাবুর কোনও সাড়া না পেয়ে পুলিশকে জানাই। তারা এসে তাঁকে উদ্ধার করে।”
প্রতিবেশীরা আরও বলেন, আততায়ীরা ঘরের সব জিনিস এলোমেলো করে দেন। দেখে মনে হচ্ছে কিছু খোঁজাখুজির চেষ্টা চালানো হয়েছে। জগদীশবাবুর ঘরের একটি জানলার গ্রিল দরজার মতো খোলা যায় । সেখান দিয়ে কার্নিসে নেমে পিছনের ফাঁকা জমি দিয়ে আততায়ীরা পালিয়ে যায় বলে প্রতিবেশীদের অনুমান।
জগদীশবাবুর দূর সম্পর্কের এক নাতি শানু ধাড়া বলেন, “শনিবার রাতে আমি অফিস থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম সাড়ে দশটা নাগাদ। রাত একটা নাগাদ একটা আওয়াজ শুনতে পাই। তারপরই দেখি বাড়িতে থাকা ভাড়াটে এবং দাদুর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু লোক তাঁকে ডাকাডাকি করছে। পরে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে দাদুকে বাথরুম থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। তখনই দেখতে পাই তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
জগদীশবাবু স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। রাজারহাট টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের যুবর সভাপতি পার্থ সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এই বিষয়ে পার্থবাবু বলেন, “এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এটা তাঁর পারিবারিক অশান্তির জেরেই হতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।” রাতেই বাগুইআটি থানার পুলিশ বছর ছাব্বিশের বাবাই এবং মনোহরণকে আটক করে। পরে বাবাইকে গ্রেফতার করা হয়।
জগদীশবাবুর দুটি বিয়ে। তাঁর তিন মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি নিজের সম্পত্তি ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, মেয়ে এবং তাঁর সন্তানরা চেয়েছিলেন পুরো সম্পত্তির ভাগ নিতে। সেই নিয়ে অনেক দিন ধরেই অশান্তিতে ভুগছিলেন জগদীশবাবু। শনিবার রাতে সেই অশান্তি হয়েছিল কি না তা জানারই চেষ্টা করছে বাগুইআটি থানার তদন্তকারীরা। রবিবার সকালে জগদীশবাবুর ছেলে বিশ্বনাথ মল্লিক ইকো পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । সম্পত্তির জন্যই তাঁর বাবাকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ ।