কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবার বেনজিরভাবে বিডিওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। শাসক দলকে সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলাও হয়েছিল। একাধিক এলাকার বিডিওদের আদালতে ডেকেও আনা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও-র বিরুদ্ধেও। সেই নিয়ে হাইকোর্টের তরফে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে অনুসন্ধানের নির্দেশও দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দিয়েছেন আদালতে। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিডিও ও এসডিও-কে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে। একইসঙ্গে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের এক অতিরিক্ত অফিসারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অনুসন্ধান রিপোর্টে।
উলুবেড়িয়ার বহিরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই আসনটি ছিল ওবিসি সংরক্ষিত। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে’র অনুসন্ধান রিপোর্টে উঠে এসেছে, সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বেগমের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো তৃণমূল প্রার্থী লুৎফর বেগম যে ওবিসি সার্টিফিকেটটি জমা দিয়েছিলেন, সেটি জাল। বিষয়টি নিয়ে এসডিও অভিযোগ পাওয়ার পরেও কোনও পদক্ষেপ করেননি। সেই ঘটনায় এবার সংশ্লিষ্ট বিডিও, এসডিও ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ওই আধিকারিক – তিনজনকেই সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে তথ্যনুসন্ধান রিপোর্টে। রিপোর্টে এও স্পষ্ট যে ওই তৃণমূল প্রার্থীকে বিনা লড়াইয়ে ভোটে জিততে সাহায্য করেছেন সংশ্লিষ্ট বিডিও ও এসডিও।
আজ রিপোর্ট পাওয়ার পর হাইকোর্ট উলুবেড়িয়ার বহিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই আসনকে শূন্য (খালি) হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ, ওই আসনের নির্বাচন বাতিল করার জন্য বলা হয়েছে। আদালত এও জানিয়েছে, ওই আসনে ভোটে লড়ার অধিকারী নেই তৃণমূল প্রার্থী লুৎফর বেগমের। তবে কবে ওই আসনে আবার ভোট হবে, সেটি কমিশন ও রাজ্যকে আলোচনা করে স্থির করার জন্য বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি তথ্যানুসন্ধান রিপোর্টে উঠে আসা বিডিও, এসডিও ও জাতি শংসাপত্র বিভাগের ওই অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দ্রুত বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে ও সাসপেন্ড করার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।