কলকাতা : রাজ্যে বিরোধী দলগুলি কর্মিসভা বা বৈঠক করতে চাইলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে বিরোধীদের কর্মিসভা এবং বৈঠক। আগামী দিনেও এমন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। আদালতের কাছে তাঁর আবেদন ছিল, হাইকোর্ট একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিক, যাতে বিনা বাধায় কোনও দলীয় কর্মসূচি এবং কর্মিসভা করতে পারেন বিরোধীরা। মামলার শুনানি হয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল হাইকোর্ট। শনিবার সেই রায় জানায় আদালত। তাতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর সেই আবেদনে সায় নেই কলকাতা হাইকোর্টের।
তবে একই সঙ্গে রাজ্যকেও কলকাতা হাইকোর্টের থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়, যেন কেবল উপযুক্ত ক্ষেত্রেই ১৪৪ ধারা ব্যবহার করা হয়। শুভেন্দু অধিকারীর আবেদন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এমন আশঙ্কা প্রকাশের ক্ষেত্রে যথার্থ উপাদান বা ভিত্তি নেই। তবে রাজ্যকেও ১৪৪ ধারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করার পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের অনেক নেতাই সাম্প্রতিককালে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের দলীয় কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগও তুলেছিলেন বিরোধী নেতারা, বিশেষ করে বিজেপির নেতারা। শুভেন্দু অধিকারীও সাম্প্রতিক কালে অভিযোগ তুলেছেন, তিনি যেখানেই যাচ্ছেন তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
মামলায় শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, আদালতের নির্দেশের পরেও শুভেন্দু অধিকারী যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে। এভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা যায় না বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু আইনজীবীরা। অভিযোগ ছিল, ২৫ জুন নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় সভা করতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি বিরোধী দলের সভাপতিকেও বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য এর আগে গত বছর বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, বিরোধী দলনেতা চাইলে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তেই যেতে পারেন। আদালতের এই নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। আগামী দিনে যাতে আর এমন ঘটনা না হয়, তার জন্য আদালত যাতে একটি গাইডলাইন তৈরি করে দেয়, কলকাতা হাইকোর্টে সেই আবেদনই করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে শনিবার হাইকোর্টের রায়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, সেই আবেদনে সায় নেই আদালতের।