কলকাতা: পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিজেপি কর্মীর সঞ্জয় বেরার জেল হেফাজতে কীভাবে মৃত্যু হল? তা নিয়ে মঙ্গলবারই এক্স হ্যান্ডেলে সরব হয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে সেই মামলা ওঠে। বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলায় এদিন একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ডেবরা থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর ও প্রেসিডেন্সি জেলের সিসিটিভি ফুটেজও সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিম্ন আদালতের বিচারকের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের থেকেও রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, এসএসকেএম হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে একটি টিম গঠন করে মৃতের দেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে। গোটা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট এবং সেই সময়ে পরিবারের সদস্যদেরও থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার পুরুষোত্তম এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় বেরাকে গত ৪ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল। তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক সংঘর্ষের এক অভিযোগ পাকড়াও করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর ৫ জুন তাঁকে নিম্ন আদালতে পেশ করা হলে, বিচারক তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজ্যের তরফে এদিন হাইকোর্টে দাবি করা হয়, জেলে পৌঁছনোর পর, জেলের গেট পার করার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয় বেরা। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে চিকিৎসার পর ফের তাঁকে পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর জেলে।
রাজ্যের বক্তব্য, সংশোধনাগারের চিকিৎসকরা সঞ্জয় বেরার শারীরিক অস্থা খতিয়ে দেখে মেদিনীপুর হাসপাতালে ফেরত পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেলে। গত ১১ জুন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালের বহির্বিভাগে। ১১-১৪ জুন সঞ্জয়কে প্রেসিডেন্সি জেলেই রাখা হয়েছিল। এরপর ১৪ জুন আবার অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে এবং ১৮ জুন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের।
এদিকে মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সঞ্জয় বেরাকে জেল হেফাজতে পিটিয়ে মারা হয়েছে। যদিও রাজ্যের তরফে দাবি করা হচ্ছে, হাসপাতালের থেকে যে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ওই ব্যক্তি নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।