Calcutta High Court: ১২ বছরের নাবালিকার যমজ সন্তানের ‘দায়িত্ব’ কেউ না নিলে, নিতে হবে রাষ্ট্রকে: হাইকোর্ট

Shrabanti Saha | Edited By: Soumya Saha

Apr 07, 2023 | 3:44 PM

Minor Girl Pregnancy: ১২ বছরের এক নাবালিকার গর্ভে যমজ ভ্রূণ। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট বলছে গর্ভপাতের অনুমতি দিলে, নাবালিকার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গর্ভপাতের অনুরোধ ফিরিয়ে কী বলছে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ?

Calcutta High Court: ১২ বছরের নাবালিকার যমজ সন্তানের ‘দায়িত্ব’ কেউ না নিলে, নিতে হবে রাষ্ট্রকে: হাইকোর্ট
প্রতীকী ছবি

Follow Us

কলকাতা: সম্মানের সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় সেই কথা বর্ণিত রয়েছে। কিন্তু, সেই অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে যদি প্রাণটাই না থাকে? তাহলে? এক নির্যাতিতা নাবালিকার গর্ভপাতের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় এমনই এক দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছিল আদালত। ১২ বছরের এক নাবালিকার গর্ভে যমজ ভ্রূণ। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট বলছে গর্ভপাতের অনুমতি দিলে, নাবালিকার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আবার সংবিধান অনুযায়ী, নাবালিকার সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু এই যমজ শিশুর জন্ম হলে, সেই নির্যাতন ও অকাঙ্খিত গর্ভাবস্থার ক্ষত সারা জীবন বয়ে নিয়ে চলতে হতে পারে মাকে। নাবালিকার মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ওই যজম সন্তানকে মানুষ করার জন্য আর্থিকভাবে সমস্যার মুখেও পড়তে হতে পারে। ২৮ সপ্তাহের গর্ভবতী ওই নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি না দেওয়ার সময় সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছিলেন হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।

মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকারকে আগে গুরুত্ব দেওয়া হবে? নাকি নাবালিকার জীবনকে আগে গুরুত্ব দেওয়া হবে? বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু তাঁর নির্দেশনামায় লিখেছেন, নাবালিকার জীবনকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বিচারপতির প্রশ্ন, যদি গর্ভপাত করাতে গিয়ে নাবালিকার জীবনটাই আর না থাকে, তাহলে কার ব্যক্তিগত জীবন, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করা হবে? সেই কারণে, এই অবস্থায় নাবালিকার জীবনকেই সবার আগে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে আদালত। তাই মেডিক্যাল বোর্ডের শঙ্কা খতিয়ে দেখে, নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি দিল না আদালত।

কিন্তু নাবালিকার সামাজিক সম্মান ও মর্যাদা তাহলে কীভাবে রক্ষা হবে? সেই নিয়েই আলোকপাত করেছেন বিচারপতি। বিচারপতি তাঁর নির্দেশনামায় লিখছেন, এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র এক্ষেত্রে ঘুমিয়ে থাকতে পারে না। নাবালিকা মা তাঁর যমজ সন্তানের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখতে হবে রাষ্ট্রকে।

উল্লেখ্য, নাবালিকার পরিবার বলতে এখন তার মা ও ভাই। বাবা বছর খানেক আগেই পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। একাহাতেই ছেলে-মেয়েকে মানুষ করছেন নাবালিকার মা। একটি বিউটি পার্লারে কাজ করে সামান্য আয়ে সংসার চলে। নাবালিকার বাড়ির এই আর্থিক অনটনের বিষয়টিও আদালতের নজর এড়ায়নি। যদি কেউ নাবালিকার ওই সন্তানদের দত্তক না নেয়, তাহলে এমন টানাটানির সংসারে কীভাবে দুই সন্তানকে পালন করবে তারা? হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে জুভেনাইল জাস্টিস আইন অনুযায়ী ওই দুই শিশুর দত্তকের জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানাতে পারেন পরিবারের লোকেরা। সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী, ওই দুই শিশুর দেখভালের দায়িত্ব নেবে প্রশাসন।

Next Article