কলকাতা : অর্জুন চৌরাসিয়ার দেহের ময়নাতদন্ত হবে কমান্ড হাসপাতালে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে শুরু থেকেই এমন দাবি করা হচ্ছিল। এবার পরিবারের সেই দাবি মেনেই কমান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার রাজ্যের তরফে হাইকোর্টে জানানো হয়, চিকিৎসক, পুলিশ প্রস্তুত হয়ে রয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। পরিবার ময়নাতদন্তে সহযোগিতা করছে না। অন্যদিকে মৃত অর্জুন চৌরাসিয়ার পরিবারের আইনজীবীর বক্তব্য, রাজ্যের ময়নাতদন্তে আপত্তি আছে পরিবারের। পরিবারের বক্তব্য, এইমস কল্যাণী বা কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি কিংবা যে কোনও নিরপেক্ষ সংস্থা করুক। পুলিশের উপরে তাদের কোনও বিশ্বাস নেই।
রাজ্যের মেডিকেল কলেজের ময়না তদন্তের উপরে যে মৃতের পরিবারের আস্থা নেই সেই কথাও জানানো হয় আদালতে। পরিবারের দাবি ছিল কল্যাণী এইমসে কিংবা কমান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হোক। সেই দাবি মেনে কমান্ড হাসপাতালেই অর্জুন চৌরাসিয়ার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। উল্লেখ্য, হাইকোর্টের এমন নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তদন্ত প্রক্রিয়ায় রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্তরা। সেই কারণে, তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর দেওয়া হয়েছিল। এবার হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, ময়নাতদন্ত করবে কমান্ড হাসপাতাল। অর্থাৎ, রাজ্য প্রশাসনের অধীনে থাকা কোনও হাসপাতালের উপরেও ভরসা রাখতে পারলেন না অর্জুন চৌরাসিয়ার পরিবারের লোকেরা।
এদিকে আর জি কর হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেখানে তিন জন চিকিৎসকের এক প্রতিনিধি দল তৈরি রাখা হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ভিডিয়োগ্রাফির প্রস্তুতিও তৈরি রাখা হয়েছিল। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আর জি কর থেকে দেহ কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পুলিশ থাকতে হবে। উত্তর ২৪ পরগনার সিজেএম হাজির থাকবেন ময়না তদন্তের সময়। কমান্ড হাসপাতালকে টিম গঠন করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালতে। ময়না তদন্তের সময় থাকবেন কল্যাণী এইমস-এর বিশেষজ্ঞও। গোটা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। তবে ময়না তদন্ত আজ হবে? নাকি আগামিকাল? এই প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব করতে হবে। কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মৃতের পরিবারকে সব রকমভাবে সুরক্ষা দিতে হবে। ময়নাতদন্তের সময় এইমস বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি আর জি কর হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের এইওডি উপস্থিত থাকবেন।
আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল জানিয়েছেন, “এটি একটি ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা আছে। এর আগেই নির্দেশ ছিল, ভোট পরবর্তী হিংসায় যত ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে, সব তদন্ত করবে সিবিআই। আমাদের মূল দাবি, পুলিশকে দিয়ে কোনও তদন্ত করা যাবে না। এই তদন্তভার সিবিআইকে দিতে হবে।”