কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হয়েছে আদালতে। অতীতে যোগেশ চন্দ্র ল’ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। কিন্তু সেক্ষেত্রে কোনও নিয়ম না মেনেই তিনি কলেজের অধ্যক্ষ পদে বসেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মানিক ভট্টাচার্য ওই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যে বেতন পেয়েছেন, তা ফিরিয়ে নেওয়া হোক, সেই দাবিতে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আজ মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মানিক যা বেতন পেয়েছেন, তা ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।
একইসঙ্গে ওই কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কা ও এক অধ্যাপক অচিনা কুণ্ডুকেও সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার থেকে তাঁরা আর কলেজে ঢুকতে পারবেন না। যোগেশ চন্দ্র ল’ কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে আপাতত তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছে আদালত। এর পাশাপাশি আগামিকাল ওই কলেজের পরিচালন সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তাতেও এদিন অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টে মানিকের বিরুদ্ধে এই মামলায় মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল, কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই মানিকবাবু কলেজের অধ্যক্ষ পদে বসেছিলেন। মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, কোনও কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য অন্তত ১৫ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু মানিকবাবুর ক্ষেত্রে সেরকম কিছু ছিল না বলেই অভিযোগ। সেই মামলায় আজ এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় মামলাকারীদের আরও অভিযোগ ছিল, উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকলেও বেশ কয়েকজন অধ্যাপককে নিয়োগ করেছেন মানিকবাবু। সেই অধ্যাপকরা নিজেদের স্বার্থে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকেও প্রশ্রয় দিয়েছেন বলে অভিযোগ। মামলাকারীর বক্তব্য, এই দুষ্কৃতীরা কলেজ চত্বরকে নিজেদের আখড়া বানিয়ে ফেলেছে। পুলিশ প্রশাসনকে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ মামলাকারীর। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ পুলিশকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দুষ্কৃতীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে আদালতে হাজির করার জন্যও বলা হয়েছে। বিষয়টি দেখার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেও মৌখিক নির্দেশ দেন বিচারপতি।