কলকাতা: গরু পাচারকাণ্ড মামলায় এবার চাপ বাড়ল অনুব্রত মণ্ডলের। আদালতের রক্ষাকবচ পেলেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। অর্থাৎ সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে এবার অনুব্রতকে যেতেই হবে। অনুব্রত মণ্ডল রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখল। নিঃসন্দেহে আদালতের এই নির্দেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই মুহূর্তে। গত ৪ মার্চ গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তৃতীয়বারের জন্য নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। ১৫ মার্চ সকাল ১১টায় তাঁকে নিজাম প্যালেসে হাজির হতে বলা হয়। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সিঙ্গল বেঞ্চে রক্ষাকবচ চেয়ে মামলা করেন। গত ১১ মার্চ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ অনুব্রতর আর্জি খারিজ করে দেয়।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, এই মামলায় এখনই আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। বিকল্প আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে আগাম জামিনের আবেদন তিনি করতে পারেন। তবে সিবিআইয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব মেটানোর যে আর্জি অনুব্রতর ছিল, তা খারিজ করে দেয় আদালত। যেহেতু বীরভূমের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে দেখা গিয়েছে, তাই আদালত প্রাথমিকভাবে মনে করেছে অনুব্রত এতটাও অসুস্থ নন যে গৃহবন্দি থাকতে হবে। সে সময় অনুব্রত মণ্ডল এসএসকেএম হাসপাতালে ছিলেন। সেখান থেকে নিজাম প্যালেসের দূরত্ব কয়েকশো মিটার।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘সমস্ত তথ্য, বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে আবেদনকারী বোলপুরের বাইরেও যাচ্ছেন। তাঁকে হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে। শারীরিক কারণে কলকাতাও গিয়েছেন তিনি। মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্যে কোথাও এমন পরিস্থিতির উল্লেখ নেই যে আবেদনকারীকে গৃহবন্দি বা হাসপাতালে থাকতে হবে।’
সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ই মার্চ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে যান অনুব্রত মণ্ডল। শুনানিতে তাঁর আইনজীবীরা আর্জি জানান, আগামিদিনে সিবিআই যদি বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে তলব করেন, তাহলেও তাঁর সঙ্গে যেন আদালতের রক্ষাকবচ থাকে। ১৬ মার্চ সেই মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে রায়দান স্থগিত রাখা হয়। মঙ্গলবার তারই রায়দান করল আদালত।