কলকাতা ও দুর্গাপুর : গত বছরের নভেম্বরে দুর্গাপুরে (Durgapur) এক মুক ও বধির কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। কিশোরীর উপর নারকীয় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরেই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা কোকওভেন থানায় অভিযোগ জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ (Police) অভিযুক্তকে আটক করলেও নির্দিষ্ট কোনও মামলা রুজু করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। পথে নেমেছিল বামেরা। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী শামিম আহমেদ। এ ঘটনায় বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সংশ্লিষ্ট থানার কাছে ঘটনার রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
সূত্রের খবর, কোকওভেন থানা এলাকায় গত ২১ নভেম্বরের ঘটে এই ঘটনা। ঘটনার তিনদিন পড়ে এফআইআর দায়ের হয় পুলিশের কাছে। সেখানে ধর্ষণের বদলে যৌন হেনস্থার অভিযোগের ধারা দেওয়া হয় বলে খবর। ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি নেওয়া হলেও সেখানেও মানা হয়নি নিয়ম। এরপরই এই কেসের জল গড়ায় হাইকোর্টে। ধর্ষনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেনও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছিল? থানার কাছে কৈফিয়ত চেয়েছেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। একইসঙ্গে ২১ থেকে ২৩ নভেম্বরের থানার সিসিটিভি ফুটেজ তলব করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে বলে জানতে পারা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে পুলিশের বিরুদ্ধে এই ঘটনার তথ্য লোপাটের অভিযোগ এনেছিলেন আইনজীবী শামিম আহমেদ। আগেই দাবি করেছিলেন, তদন্ত ঢাকতে এবং পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বসানো হয়েছিল খাপ পঞ্চায়েত। কাদের নির্দেশে বসেছিল খাপ পঞ্চায়েত? কেন দেরিতে নেওয়া হয়েছিল অভিযোগ? অভিযোগ সামনে আসার পরেও নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষায় কেন দেরি হয়েছিল সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা এবার এই মামলা সরাসরি হাইকোর্টে এসে পড়ায় অস্বস্তি বাড়বে পুলিশের। এদিকে দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে আগেই আন্দোলনে সামিল হয়েছে বামেরা। কোকওভেন থানার সামনেও চলেছে বিক্ষোভ। তবে পুলিশ ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৭৭, ৩২৩, ৪৫৪, ৩২৬ ধারা ও পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে। আগামী শুক্রবারের শুনানিতে এ বিষয়ে রাজ্যের শীর্ষ আদালত কী পর্যবেক্ষণ দেয় এখন সেটাও দেখার।