কলকাতা: অতিমারির কোপে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ সংস্কৃতি এখন ছেয়ে গিয়েছে প্রায় গোটা বিশ্বে। ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তও চলে না। সরকারি থেকে বেসরকারি অফিসের কাজ, এমনকী আদালতে মামলা চলার জন্যও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট যোগাযোগ চাই-ই চাই। কিন্তু এই সময় দাঁড়িয়ে ইন্টারনেটে কানেক্টিভিটি বিভ্রাটের কারণে জেরবার হচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা। যা নিয়ে শুক্রবার হাইকোর্টের সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটরকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। কানেক্টিভিটি সমস্যায় তিতিবিরক্ত হয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “ভার্চুয়াল শুনানির নামে সার্কাস চলছে।”
করোনার ধাক্কায় গত বছর থেকেই কলকাতা হাইকোর্টে সশরীরে মামলা শোনা বন্ধ রয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াই চলে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে। সম্প্রতি কয়েকজন বিচারপতি অবশ্য আদালতে আসা শুরু করেছেন, কিন্তু আইনজীবীরা অনলাইনেই শুনানি চালাচ্ছেন। কিন্তু ইদানীং প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে, ‘মিটিং লিঙ্ক’ দেওয়ার পরও কানেক্টেভিটি জট থেকে যাচ্ছে। ফলে সময় মতো কিছুতেই মামলার শুনানি শুরু করা যাচ্ছে না। আইনজীবীরা চাইলেও অনেক ক্ষেত্রে শুনানিতে হাজির হতে পারছেন না। ফলে মামলার শুনানিতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে।
সমস্যা আরও রয়েছে। সাধারণত যে কোনও মামলার শুনানির ক্ষেত্রেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ হোক বা রায়, তার প্রতিটি শব্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু কানেক্টিভিটি সমস্যার জেরে অনেক ক্ষেত্রেই বিচারপতিদের রায়দান স্পষ্টভাবে শোনা যাচ্ছে না। এই নিয়ে আগেও একাধিকবার বিচারপতিরা সমস্যা সমাধান করতে বলেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা না হওয়ায় শুক্রবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ফাঁকা এজলাসে বসে স্টেজ শো করবো না আর, বসবো না বেঞ্চে। ভার্চুয়াল শুনানির নামে সার্কাস চলছে। মানুষ বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কানেক্টিভিটি সমস্যায়।” অবিলম্বে এই পরিস্থিতি না বদল হলে অবমাননার রুল জারির হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি। আরও পড়ুন: ‘যেখানে খুশি যাক না!’ শুভেন্দুর আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি নিয়ে ‘ডোন্ট কেয়ার’ মুকুল