কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের আবহে দিকে দিকে অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরেও গত ২৫ জুন বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। তাতে বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছিলেন। এলাকা থেকে বোমাও উদ্ধার হয়েছিল। সে সবের পর প্রাথমিকভাবে পুলিশ বোমা বিস্ফোরণের কথা স্বীকারও করে নিয়েছিল এবং তদন্ত শুরু করেছিল। বোমা ফাটার কথা পুলিশ প্রথমে স্বীকার করলেও এনআইএ আইন মেনে সেই বিষয়টি কেন্দ্রকে জানায়নি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য। এমনকী রাজ্য পুলিশ ওই ঘটনায় বিস্ফোরণের আইনের ধারায় মামলা না করে, সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ধারায় মামলা করে তদন্ত করছে। এটিও একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতির বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। বোমা ফাটার ঘটনায় ভিন্ন ধারায় কেন মামলা করা হল? কেন রাজ্য পুলিশ রিপোর্টে বোমা ফাটার কথা মানলেও কেন্দ্রকে তা জানায়নি? এমন বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। এদিন শুনানি চলাকালীনই বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রাজ্যকে নির্দেশ দেন, এখনই যাতে সেই রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়। বিচারপতি বলেন, ‘রাজ্য আগে বিস্ফোরণের ঘটনার কথা কেন্দ্রকে জানাবে। তারপর সেই ঘটনায় এনআইএ তদন্তভার নেবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র।’
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের আগে জামালপুরের ওই বোমাবাজির অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক জলঘোলা হয়েছিল। জামালপুরের এক দম্পতি সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই দম্পতি প্রার্থীর বাড়ির সামনে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। কিন্তু পরবর্তীতে এলাকার সিপিএম সমর্থক এক ফুচকা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ওই ঘটনায়। তারপর যাঁর বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল, সেই সিপিএম প্রার্থী সুশান্ত মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই সিপিএম দম্পতি প্রার্থীরাই পরিকল্পনা করে নিজেদের বাড়িতে বোমাবাজি করেছিল। পরবর্তীতে গ্রেফতার হওয়া ওই সিপিএম প্রার্থী মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করে। সেই মামলার শুনানিতেই এবার আদালতে প্রশ্নের মুখে রাজ্য।