কলকাতা: রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Labourers) সংখ্যা কত? তা জানতে চায় আদালত। ১২ বছরেও কেন এই সংখ্যা স্পষ্ট নয়, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই বিষয়ে হলফনামা দিয়ে তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের এক অভিযোগের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলাকারীর বক্তব্য, ২০১১ সালে নতুন সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তারা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিলেন কতজন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। কিন্তু রাজ্য এত দিনেও সেই তথ্য জানিয়ে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ তাঁর। পরবর্তীতে কোভিডের সময়ে যখন বহু পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরেছিলেন। সেই সময় রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলেও কোনও তথ্য মেলেনি বলে অভিযোগ।
শেষ পর্যন্ত মামলাকারী ব্যক্তি ২০২২ সালে একটি আরটিআই-এর মাধ্যমে জানতে পারেন, রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কত, সেই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। আলাদা করে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করেনি রাজ্য, এমনই বক্তব্য মামলাকারীর। এদিন মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও কারখানায় ৫-৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করলেও রাজ্যকে সেই বিষয় জানাতে হবে ওই প্রতিষ্ঠানকে। সেই সব শ্রমিকদের সব ধরনের সাহায্য করবে রাজ্যে। সংশ্লিষ্ট দফতরে থাকবেন একজন ইন্সপেক্টর।
প্রসঙ্গত, গোটা দেশজুড়ে যখন কোভিডের আতঙ্ক, তখন পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যাটি প্রকট হয়ে উঠেছিল। লকডাউনে আটকে পড়ার ভয়ে বহু মানুষ, যাঁরা নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য রাজ্য কাজ করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছিল। ট্রেন, বাস সব বন্ধ। তারই মধ্যে পায়ে হেঁটে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পারি দিয়েছিলেন তাঁরা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কেউ পেরেছেন, কেউ আবার পারেননি। পরিযায়ী শ্রমিকদের ইস্যু কতটা প্রকট হয়ে উঠতে পারে, তা টের পাইয়ে দিয়েছিল কোভিডের লকডাউন।