কলকাতা : স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুনর্গঠন নিয়ে অনেকদিন ধরেই টালবাহানা চলছিল। গ্রামের মানুষের অসুবিধা হওয়া সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের কোনও নজর নেই বলেই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সেই মামলাতেই এবার জরিমানা ধার্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। বর্ধমানের জামালপুরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুনর্গঠন নিয়েই সেই মামলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সেই মামলায় রাজ্যকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলল আদালত।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। মামলায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে জরিমানা ধার্য করেছে আদালত। স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুনর্গঠনে দেরি হওয়ায় রাজ্যের কাছে তথ্য তলব করেছিল আদালত। সেই তথ্য না দেওয়ায় জরিমানা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামের হৈমবতী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রায় শতবর্ষ প্রাচীন। ব্রিটিশ আমলে সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়েছিল। বহুদিন ধরেই অবহেলার শিকার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কার্যত ভগ্নদশা সেই শতবর্ষ প্রাচীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। গাছ গাছড়ায় ভরে গিয়েছে সেটি। শেষ যে চিকিৎসক ছিলেন, তিনিও চলে গিয়েছেন বছর দেড়েক আগে। তারপর থেকে আর কোনও চিকিৎসা হয় না সেখানে। স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধায় পড়েছেন গ্রামের মানুষ। হঠাৎ অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু পাওয়ার উপায় নেই।
এনসেফালাইটিস প্রবণ এলাকা হওয়ার কারণে, ২০১৪ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অধিগ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি পাঠান গ্রামবাসীরা। জেলা পরিষদেও অনুরোধ জানান তাঁরা।
জেলা পরিষদ উত্তরে জানায় যে তারা এই বিষয়ে পঞ্চায়েত দফতরকে জানিয়েছে। এরপর অবহেলার অভিযোগ তুলে ২০২০ সালে মামলা দায়ের করেন গ্রামের বর্ষীয়ান শিক্ষক গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়।
রাজ্য জানায় যে, গ্রামে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ না থাকলে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়া সম্ভব নয়। ওই গ্রামে ২০ হাজার মানুষ বাস করে বলে দাবি রাজ্যের। মামলাকারী পাল্টা দাবি করেন, গ্রামে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ থাকেন, রাজ্যের দাবি ঠিক নয়। রাজ্যকে আবারও তথ্য পেশ করার নির্দেশ দেয় আদালত। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত সেই নির্দেশ পালন করেনি রাজ্য। তাই এবার জরিমানা ধার্য করল হাইকোর্ট।