কলকাতা: পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বেশি থাকা সত্ত্বেও নাম নেই মেধা তালিকায়। এমনই অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। আর সেই মামলার জেরেই ফের আটকে গেল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের প্রক্রিয়া। ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য তালিকা প্রকাশ করা হয়ে গেলেও ফের আইনি জটিলতায় আটকে গেল সেই প্রক্রিয়া। আজ, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী শুক্রবার ফের হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়োগের কোনও কাজ হবে না শুক্রবার পর্যন্ত।
দীর্ঘদিন ধরেই আইনি জটে আটকে ছিল এই নিয়োগ প্রক্রিয়া। সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর গত ২১ জুন উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ করে এসএসসি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১০ শতাংশ পার্শ্বশিক্ষক সংরক্ষণ বাদ দিয়ে মোট ১৪ হাজার ৩৩৯ টি শূন্যপদে নিয়োগ হবে। যদিও সেই নিয়োগ শুরুর আগেই নতুন করে না থমকে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে এই মামলায়।
বেনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেছেন দুই প্রার্থী মৌমিতা মিত্র ও শেখ জামালউদ্দিন। তাঁদের দাবি, তাঁদের থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা ইন্টারভিউর তালিকায় জায়গা পেলেও তাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই। সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলা শোনেন এ দিন। শুক্রবার ফের শুনানি হবে। পরবর্তীকালে এই মামলায় কী রায় হবে, তার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া এগোবে।
মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস সামিম বলেন, ‘উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউর লিস্ট নম্বর সহ প্রকাশ করা উচিৎ, কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছি কী ভাবে কম নম্বর প্রাপ্তদের তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের থেকে বেশি নম্বর পেয়েছেন মামলাকারীরা।’ তাঁর অভিযোগ, এর আগেও ঠিক একই ভাবে আটকে গিয়েছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরও নিয়োগ হয়নি। আবারও সেই একই ভুল। বারবার দুর্ণীতর জন্য নিয়োগ আটকে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। মামলাকারীদের আরও দাবি, গতবার মেধাতালিকায় নাম ছিল না এমন অনেকের নাম রয়েছে এ বার।
এর আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। ২০২০-র ১১ ডিসেম্বর সেই রায় দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: নারদ মামলা: গৃহীত হল মুখ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হলফনামা, ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে মমতাকেও
এই প্রসঙ্গে, শাসক দলের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। এ দিন হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পর তিনি বলেন, ‘ব্যাকডোর দিয়ে চাকরি দিতেই মেধাতালিকায় ভুল হচ্ছে। সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই বারবার মামলা আর স্থগিতাদেশ।’