কলকাতা: করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে সবকিছুই। স্কুল খুলেছে, অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক কলেজ -বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, তা কার্যত নজিরবিহীন। নিয়ম মেনে পরীক্ষা হলেও অনুপস্থিত শতাধিক পড়ুয়া। অন্তত ২৫০ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া সোমবার পরীক্ষা দিতে আসেননি বলে জানা গিয়েছে। একদিকে পড়ুয়াদের দাবি, অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাই কলেজে আসা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সুরক্ষার সব বন্দোবস্ত থাকলেও এমবিবিএস পড়ুয়ারা আসেননি পরীক্ষা দিতে।
তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা ছিল সোমবার। সেখানেই গরহাজির অন্তত ২৫০ পড়ুয়া। চিকিৎসক পড়ুয়ারা দাবি করেছিলেন, পড়ুয়াদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই পরীক্ষা বন্ধ রাখা হোক। তথ্য চেপে রেখে কলেজে আসতে বলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ, এমনটাই দাবি করেছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয়, কলেজ খোলা থাকবে, পরীক্ষার বন্দোবস্তও হবে। কেউ না এলে অনুপস্থিত বলে ধরে নেওয়া হবে।
কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, তারা কোনও পরীক্ষা বাতিল করেনি। বরং করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে RAPID ANTIGEN TEST-সহ সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দূরত্ব বজায় রেখে যাতে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, সেই ব্যবস্থাও ছিল। কর্তৃপক্ষের দাবি, কলেজে মাত্র ১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাই পরীক্ষা বাতিল করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
এই ঘটনায় হতবাক সিনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, এর আগে যখন করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত ছিল তখনও চিকিৎসক পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিয়েছেন, পাশ করার পর ইন্টার্নশিপেও যোগ দিয়েছেন। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, পরীক্ষা দিয়ে চিকিৎসক পড়ুয়াদেরই বার্তা দেওয়া উচিত ছিল সাধারণ মানুষকে এই বার্তা দেওয়া যে, করোনাকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে। তা না হয়ে আরও বেশি করে ভুল বার্তা পৌঁছল বলে মনে করছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, আগামিকাল, মঙ্গলবার আরও তিনটি পরীক্ষা রয়েছে। সেই সকল পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা আসেন কি না তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ। এরপরই অনুপস্থিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনও নতুন কোনও সংক্রমণের ঢেউ নিয়ে সতর্কবার্তা দেয়নি।