কলকাতা: সরকারি হাসপাতালে অনেক পরিষেবাই পাওয়া যায় বিনামূল্যে অথবা সস্তায়। তাই কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে দরিদ্র মানুষ সরকারি হাসপাতালের ওপরই ভরসা করে থাকেন। কিন্তু এনআরএস হাসপাতালের বাইরে যে ছবি দেখা গেল, তাতে হাসপাতালের পরিষেবা ও পরিকাঠামো নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে গাড়িতেই শুয়ে থাকতে হচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীকে। বারাসতের পীরগাছা গ্রামের বাসিন্দা আঙ্গুরা বেগম টাটা সুমো গাড়িতে শুয়ে রয়েছেন। শুক্রবার রাতে দেখা গেল সেই ছবি।
জানা গিয়েছে, ১৭ দিন আগে আঙ্গুরা বেগমের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। প্রথমে বারাসাতের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে তাঁকে ভর্তি করা হয়। তাঁর প্রতিবেশী মশিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ওই নার্সিং হোমে চিকিৎসক কিছু টেস্ট করাতে বলেন। প্রাথমিক রিপোর্টেই ক্যান্সারের সম্ভাবনা বুঝতে পেরে চিকিৎসক আরও কিছু টেস্ট করাতে দেন। এরপরই চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ওই মহিলা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত।
রিপোর্ট নিয়ে প্রথমে ঠাকুর পুকুর ক্যানসার হাসপাতালে যায় পরিবার। কিন্তু সেখানে, চিকিৎসার খরচ শুনে ফিরে আসেন তাঁরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের আউটডোরে রোগীকে দেখার পর ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়। রোগীর ছেলে শেখ আমির আলি রহমান জানিয়েছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রেসক্রিপশনে লিখে দেওয়া হয়, কোনও বেড নেই। এরপর এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁদের। সেখানে নিয়ে গিয়ে দেখেন একই অবস্থা। কোনও বেড নেই। তাই আপাতত ছাঁই হয়েছে হাসপাতালের বাইরে। গাড়িতেই পড়ে রয়েছেন ওই রোগী।
পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত দু দিন ধরে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালো ছোপ তৈরি হচ্ছে রোগী, দাঁতের গোড়া থেকে অনর্গল রক্ত পড়ছে। পরিবারের দাবি, তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। তাই, সরকারি হাসপাতালে পরিষেবার এমন অবস্থা দেখে কার্যত হতাশ পরিবার। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে রেফার করার ঘটনা অবশ্য কলকাতা শহরে নতুন নয়। আগেও এমন অভিযোগ সামনে এসেছে একাধিকবার।