কলকাতা : শুধু প্রসন্ন রায় বা প্রদীপ সিং নন, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাকি মিডলম্যানের সংখ্যা অনেক। প্রার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সুকৌশলে টাকা নিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন তাঁরা। এই মামলায় চার্জশিট পেশ হওয়ার পরই এমন বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আনলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, দুর্নীতি হয়েছে একেবারে সংগঠিতভাবে। দুর্নীতির জাল যে ঠিক কতদূর বিস্তৃত ছিল, তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তাঁদের। আন্দোলনকারী প্রার্থীদের দাবি, অযোগ্য হিসেবে যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁরা আসলে ছিলেন মিডলম্যান।
গত কয়েক মাস ধরে একযোগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ শিক্ষা দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন, এমন সব ব্যক্তিদের। এতদিনে তদন্তকারীরা জানতে মোটামুটিভাবে জানতে পেরেছেন, কীভাবে টাকার দিয়ে চাকরি হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্কুলে। তবে চাকরি প্রার্থীরা একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আনছেন।
চার্জশিটে ১২ জনের নাম রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার মধ্যে শান্তিপ্রসাদ, কল্যাণময় ছাড়াও নাম রয়েছে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ইমাম মোমিন, আজাদ আলি মির্জা ও জুঁই দাসের। চাকরি প্রার্থীদের দাবি, ওই সব অযোগ্য প্রার্থীরা সাধারণ প্রার্থীদের মধ্যে মিশে গিয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরির টোপ দিতেন। তারপর সেই সব ফাইল প্রসন্ন বা প্রদীপদের মাধ্যমে পৌঁছে যেত শিক্ষা দফতরের কর্তাদের হাতে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাই পাওয়ার কমিটিতে শান্তিপ্রসাদ সিনহা। আর এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। চাকরি প্রার্থীদের দাবি, মন্ত্রীর কাছ থেকে সব ধরনের অনুমোদন ছিল শান্তিপ্রসাদের কাছে। শান্তিপ্রসাদের নির্দেশ অনুযায়ী, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ডিজিটাল সই দিয়ে ছাপা হত রেকমেন্ডেশন লেটার। আর সেই রেকমেন্ডেশনের ভিত্তিতে একেবারে সরাসরি ডিজিটাল সই দিয়ে বেরত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র। তাতে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সই থাকত বলেই দাবি প্রার্থীদের।
উল্লেখ্য, প্রার্থীদের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করেই মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। আর এবার সেই প্রার্থীরাই আরও অভিযোগ সামনে আনছেন।