কলকাতা : ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় মঙ্গলবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালকে। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সোমবারই তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল এবং সেই মতো আজ তিনি হাজিরা দেন সিবিআই অফিসে। ঢুকেছিলেন সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ। জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে দুপুর প্রায় দেড়টা পর্যন্ত। তিন ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে বিধায়ক স্পষ্ট জানান, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যতবার ডাকবে, ততবার তিনি আসবেন। পাশাপাশি এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও উস্কে দিনে বিধায়ক।
পরেশ পাল এদিন সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে বলেন, “বেলেঘাটায় আমরাই (তৃণমূল) সব কিছু। বিধায়ক, কাউন্সিলর… সব। ওরা তো কাউকে না কাউকে একটা পার্টি করবেই। এটা কোনও ব্যাপার নয়।” এরপর সংবাদ মাধ্যমের থেকে প্রশ্ন করা হয়, এই ঘটনায় তাঁর প্ররোচনার যে অভিযোগ উঠছে, সেই প্রসঙ্গে। জবাবে বিধায়ক পাল্টা বলেন, “আমি ওখানে থাকি নাকি?”
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে দুই বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হল বিধায়ক পরেশ পালকে। এর আগে, ১৮ মে তাঁকে প্রায় আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এদিনও প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এই ঘটনায় তাঁর কোনওরকম যোগের কথা অস্বীকার করে পাল্টা বিষয়টিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার অবশ্য দাবি করছেন, সিবিআই-এর হাতে তিনি বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ দিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ‘ডিজিটাল এভিডেন্স’। বিশ্বজিতের দাবি, অভিজিৎ সরকারের মৃত্যুর পিছনে পরেশ পালের ভূমিকা আছে। তাঁর অভিযোগ, পরেশ পাল নিজে ভোটের ফল প্রকাশের পরে হুমকি দিয়েছিলেন। যতক্ষণ পর্যন্ত পরেশ পালের বিরুদ্ধে সিবিআই ব্যবস্থা নিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিবিআই তদন্তের উপরেও পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছেন না বিশ্বজিৎ। উল্লেখ্য, এর আগে যখন সিবিআই-র চার্জশিটে পরেশ পালের নাম ছিল না, তখন সিবিআই-এর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, “ভোট হয়ে গিয়েছে। অভিজিৎ মারা গিয়েছে প্রায় বছর দেড়েকের বেশি হতে চলল। এই খুনের পিছনে থাকা পরেশ পাল এখনও বাইরে কেন? যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তারপরেও কেন সেই লোকটি বাইরে থাকবেন?”