কলকাতা: হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর গ্রেফতারি থেকে শুরু করে জেল হেফাজত-সবটাই নাটকে ভরা। তাঁকে এসএসকেএম থেকে জেলে ফেরাতে কীভাবে ইডি অফিসাররা বাহিনী সাজিয়ে হাজির হয়েছিলেন, তা অনেকেরই মনে আছে। সেই সুজয়ের জেলমুক্তি এবার সময়ের অপেক্ষা! হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর আইনজীবী মহলের একাংশ তেমনটাই মনে করছে। আর সেই সুজয়কৃষ্ণকে আটকাতে সকাল থেকে দফায় দফায় আদালতে ছুটছে সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘কালীঘাটের কাকু’ হিসেবে প্রথম তাঁর নাম সামনে আসে। পরে তদন্ত করতে গিয়ে তাঁর আসল পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শুক্রবার সকালে সেই মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়ে গিয়েছেন তিনি।
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে আর এক তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ইতিমধ্যেই আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, হেফাজতে পেতে গেলে অভিযুক্তকে সশরীরে হাজিরা দিতে হয়। কিন্তু পরপর তিনবার অসুস্থ বলে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
আজও যদি তাঁকে হেফাজতে নেওয়া না যায়, তাহলে তাঁর জেলমুক্তি একরকম নিশ্চিত। তাই আদালতে কার্যত এক নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হল শুক্রবার।
ঠিক কী হল শুক্রবার সকাল থেকে-
-তৃতীয়বার গরহাজির থাকায় ‘কালীঘাটের কাকু’র জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট বা জেল থেকে হাজির করার আবেদন জানায় সিবিআই। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফের আবেদন করা হয়।
-ঠিক হয়েছিল আজ, শুক্রবার বিচারক বিষয়টি শুনবেন, তারপর সব ঠিক হবে।
-শুক্রবার কোর্ট খুলতেই এজলাসে পৌঁছে গেল সিবিআই। আধিকারিকরা দাবি করেন, অবিলম্বে জেল থেকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হোক।
-বিচারক সব শুনে নির্দেশ দেন, আগামী ৯ ডিসেম্বর হাজিরা দিতে হবে সুজয়কৃষ্ণকে।
-এর ঠিক পরই সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবীরা তড়িঘড়ি পৌঁছে যান আদালতে। তাঁরা দাবি করেন, এক পক্ষের বক্তব্য শুনে এভাবে নির্দেশ দেওয়া যায় না। তবে বিচারক তাঁর নির্দেশে অনড় থাকেন।
-ইতিমধ্যে সকালে সুজয়কৃষ্ণকে জামিন দিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই অর্ডার সামনে আসার পর আবার কোর্টে হাজির হয় সিবিআই। এবার তাদের দাবি, ৯ তারিখ নয়, আজই হাজির করা হোক সুজয়কৃষ্ণকে। কিন্তু বিচারক আগের অর্ডার বদলাননি।
এখন প্রশ্ন হল, ৯ ডিসেম্বর যদি হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়, তাহলে কি জেল থেকে বেরিয়ে যাবেন সুজয়কৃষ্ণ? আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছেন, ৯ তারিখ হাজিরা দিতে হলে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জেল থেকে বেরিয়ে যাবেন সুজয়কৃষ্ণ। আবার একাংশের যুক্তি হল, যেহেতু হাইকোর্টে আগাম জামিনের মামলা চলছে, তাই সুজয়কৃষ্ণকে আপাতত জেলেই থাকতে হতে পারে।