আগে জানতেন না আইকোর চিটফান্ড? প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারালেন পার্থ
I-Core : শিল্প ভবনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন।
কলকাতা : আইকোর মামলার তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। আইকোর চিটফান্ড মামলার তদন্তে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে, দেখা করতে যেতে পারবেন না বলেছিলেন পার্থ। পরিবর্তে, শিল্পমন্ত্রীর দফতরে এসে দেখা করার জন্য বলেছিলেন তিনি। আর সেই আমন্ত্রণই শেষ পর্যন্ত চাপে ফেলে দিল শিল্পমন্ত্রীকে।
মন্ত্রীর ডাকে সারা দিয়ে সোজা শিল্প দফতরে গিয়ে হাজির হন সিবিআইয়ের তিন আধিকারিক। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। শিল্প ভবনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন।
দু’ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আইকোরের বৈঠকে যে তিনি উপস্থিত ছিলেন, সেকথা তিনি আজ নিজেও স্বীকার করেছেন। যদিও তাঁর বক্তব্য, তিনি সিবিআই আধিকারিকদের যা যা জানানোর সবটাই জানিয়েছেন। ২০১১ সালে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার পর, বাংলায় কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ টানার জন্যই ওই বৈঠকে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তবে সেই সময় তিনি কি জানতেন না আইকোর চিটফান্ড সংস্থা? প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান পার্থ বাবু। সোজা বলে দেন, সিবিআইকে গিয়ে এই প্রশ্ন করুন।
সোমবারই সিবিআই দফতরে যাওয়ার কথা ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রী যেতে রাজি না হওয়ায় শিল্প ভবনে গিয়েছেন আধিকারিকেরা। সেখানেই ছিলেন শিল্পমন্ত্রী। শিল্প দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন পার্থ’র আইনজীবীও। তাঁর সামনেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
চিটফান্ড সংস্থা আইকোর-এর মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ভুঁইফোড় অর্থলগ্নিকারী সংস্থা আইকোর-এর একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই সংস্থার কর্তাদের ভূয়ষী প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। কেন রাজ্যের একজন বিধায়ক তথা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এরকম একটি অনুষ্ঠানে হাজির হলেন তিনি, তা নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। আইকোরের ওই অনুষ্ঠানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরকারি সাহায্যের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল।
একটি বেসরকারি চিটফান্ড সংস্থাকে কী ভাবে অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে একজন মন্ত্রী সাহায্যের কথা বলতে পারেন? আইকোর সংস্থার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? তাঁর সঙ্গে ওই সংস্থার কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি? এই সংক্রান্ত প্রশ্নের একাধিক প্রশ্নে উত্তর খুঁজছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
আইকোর সংস্থার কর্ণধার অনুকূল মাইতিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অনুকূল মাইতির প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তাঁর সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও রকম যোগাযোগ রয়েছে কি না সেটার জানার চেষ্টা করছে সিবিআই।
আরও পড়ুন : Chit Fund Scam: জিজ্ঞাসাবাদ করতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দফতরে হাজির সিবিআই