কলকাতা : আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, গত কয়েকদিনে সর্বত্র দেখা গিয়েছে বিক্ষোভের ছবি। কেউ রাস্তায় বসে পড়েছেন, কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দাবি একটাই, ক্লাস যখন অনলাইনে হয়েছে, তখন পরীক্ষাও অনলাইনেই হবে। আর এরই মধ্যে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি জানিয়েছেন, অনলাইন নয়, অফলাইন পরীক্ষার পক্ষেই সায় রয়েছে কেন্দ্রের। রাজ্য সরকারগুলিকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি।
শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতি কেটে গিয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই কোনও অনলাইন পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া উচিত বলেই মনে করেন তিনি। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গাতেই অফলাইন পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী আরও মনে করেন, অফলাইনে পরীক্ষার জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তারপরই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে হবে সরকারকে। সূত্রের খবর, অনলাইনে পরীক্ষার পক্ষে কথা না বলার জন্য আরএসএস- এর ছাত্র সংগঠন বিদ্যার্থী পরিষদকেও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
শুক্রবার অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সরব হয়ে বিক্ষোভ দেখান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। উত্তেজনা ছড়ায় গোটা কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। এই অবস্থায় কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ অধ্যক্ষই ওই বৈঠকে অফলাইন পরীক্ষার পক্ষে সওয়াল করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এই নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামী ৩ জুন সিন্ডিকেটের বৈঠকে এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
যাদবপুর ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই অফলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির পড়ুয়ারা মনে করছেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও একই পথে হাঁটতে পারে। আর সেই আশঙ্কা থেকেই এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখা গিয়েছে বিক্ষোভের ছবি।
এই প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার জানিয়েছেন, ‘ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সরকার ও রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরীক্ষার পদ্ধতি ঠিক করেছে। আমরা প্রায় জুন মাসের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই স্নাতক স্তরের পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এই সময় কোনও কেন্দ্রীয় মনোভাব বা ইউজিসি-র তরফ থেকে কোনও মতামত আসা উচিত নয়।’