কলকাতা: আগামী ১৬ অগস্ট থেকে গোটা রাজ্যে শুরু হতে চলেছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। আর মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পকেই পাখির চোখ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এক মাস রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ নজর থাকতে চলেছে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের উপরই। যা নিয়ে লক্ষ্মীবারে সমস্ত জেলাশাসকদের পাশাপাশি এসডিও, বিডিওদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
নবান্ন সূত্রে খবর, এ দিনের বৈঠকে মুখ্যসচিব জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দুয়ারে সরকারের নানা সুবিধা দেওয়ার নাম করে কেউ যাতে টাকা না তুলতে পারে সেই বিষয়ে কড়া নজর রাখতে হবে। সম্প্রতি আমডাঙায় আধার কার্ড বানাতে যে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। জেলাশাসক, বিডিও, এসডিওদের সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই বলেন মুখ্যসচিব।
তাঁর আরও নির্দেশ, দুয়ারে সরকারের প্রত্যেকটি ক্যাম্পে বাধ্যতামূলকভাবে হেল্প ডেস্ক রাখতে হবে। যারা লিখতে পারেন না বা যাদের ফর্ম ফিলাপে অসুবিধা হবে, ওই হেল্পডেস্কের মাধ্যমে তাঁরা যাবতীয় কাজ করবেন। কোনও ভাবেই যাতে বেনিয়ম না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে পুলিশও পদক্ষেপ করবে। সরকারি আধিকারিকদের মাধ্যমেই সব কাজ হবে। আধিকারিকদের মুখ্যসচিবের নির্দেশ, আপনারাও বিভিন্ন ক্যাম্পে পরিদর্শন করবেন।
প্রসঙ্গত, এ দিন নবান্ন থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প নিয়ে তিনি কোনও ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বা জনগণের দুশ্চিন্তা হোক চান না। তাঁর কথায়, “পুরোপুরি বিনামূল্যে এই প্রকল্পে আবেদন জানানোর ফর্ম পাওয়া যাবে।” কী ভাবে আবেদন জানাতে হবে? মমতা বলেন, “দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য কাউন্টার থাকবে, সবার প্রথম সেখানে যেতে হবে। সেখানে গেলেই একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেই ফর্মে একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে। সেই নম্বরের রেকর্ড সরকারের কাছেও থাকবে।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এই ফর্ম কোনও ভাবে জেরক্স বা ডুপ্লিকেট করা যাবে না। এই ফর্ম ছাড়া অন্য কোনও ফর্ম নেওয়াও হবে না। কেউ যাতে এই ফর্মের অপব্যবহার করতে না পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা।”
মমতা বলেন, “ফর্মটা পাওয়ার পর আপনারা ওখানেই ফর্মটা ফিলআপ করে জমা দেবেন। মনে রাখবেন, ফর্মের সঙ্গেই কম্পিউটার জেনারেটেড ইউনিক নম্বরটা থাকবে। এটার সঙ্গে আধার কার্ডও লিঙ্ক করে দেওয়া হবে। এই নম্বরটাই ফর্ম ফিলাপের জন্য স্বীকার্য হবে। ঘুরপথে যদি কেউ অন্যভাবে ফর্ম জোগাড় করে তা জমা দেওয়ার চেষ্টা করে, সেটা কিন্তু মেনে নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র দুয়ারে সরকার শিবির থেকেই ফর্ম নিতে হবে।”
‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কর জমা দেওয়ার কোনও ধরনের বাধ্যবাধকতাও নেই বলে এ দিন স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে গোটা প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনও বেনিয়মের অভিযোগ থাকে, তার জন্য পৃথক হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে রাজ্য। এই নম্বরটি সোজা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ১০৭০ অথবা ২২১৪ ৩৫২৬- এই টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানালেই সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। আরও পড়ুন: পাহাড়-নীতিতে নয়া রঙ! ‘কাছাকাছি’ বিনয়-বিমল, নেপথ্যে কি শাসক শিবির?