কলকাতা: আবারও জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক দিনে আরও তিন শিশুর মৃত্যু হল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুই শিশুরই নিউমোনিয়া হয়েছে। গত তিন দিনে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে হরিণঘাটার একটি শিশু। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুর। মধ্যমগ্রামের ৬ মাসের শিশুকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, প্রথমে আরজি করে ভর্তি ছিল ওই শিশু। সুস্থ বলে ছেড়ে দেওয়ার পর, বাড়িতে গিয়ে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ ওই শিশুর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ১ বছর ৮ মাসের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গায়ে র্যাশ ছিল। ওই শিশুকে উদয়নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কলকাতা মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর।
চিকিৎসকরা বলছেন, ৩ মাস থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা অ্যাডিনো ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যভবনের তরফে আরও একটি বৈঠক করা হয়েছে। পাশাপাশি রেফারের সংখ্যা কমানোর ওপরও জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিসি রায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হচ্ছে, যদি সব জায়গা থেকে শিশুদের এই হাসপাতালে রেফার করা হয়, তাহলে তাদের পক্ষেও চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। শহরের সব মেডিক্যাল কলেজগুলিতেই পেডিয়াট্রিক বিভাগের যথেষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে। সেখানেও শিশুদের সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে।
এবিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, “প্রত্যেক বছরই এই সময়টায় শ্বাসনালি সংক্রান্ত সমস্যা আমাদের সামনে আসে। খুব বেশি আতঙ্কিত হবেন না। কিন্তু সচেতনতা ও সতর্কতা প্রয়োজন। যখন শিশুদের সর্দি, জ্বর হচ্ছে, নাক দিয়ে জল গড়াচ্ছে, খাবারে অরুচি, ২-৩ দিনে সারছে না, জানবেন বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকদের কাছে যান দ্রুত।”
প্রসঙ্গত, সোমবারই হুগলির পোলবায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক ন’মাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর শ্বাসকষ্টে ভুগছিল শিশুটি। স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখানো হয়। জ্বর না কমায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। গত ২০শে ফেব্রুয়ারি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল ওই শিশুর। তার মৃত্যুর শংসাপত্রে নিউমোনিয়া আক্রান্ত লেখা হয়েছে।