কলকাতা: এখনও কাটেনি হরিদেবপুর কাণ্ডের রেশ। তারমধ্যেই ফের কলকাতার বুকে বাতিস্তম্ভে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। মৃত কিশোরের নাম ফারজান আনসারি (১৪)। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজনারায়ণ স্ট্রিট সাহেববাগান এলাকায়। তবে, বিকেল চারটে পর্যন্ত ওই বাতিস্তম্ভে কোনও গোলোযোগ ছিল না বলেই দাবি এলাকার তৃণমূল জনপ্রতিনিধি অয়ন চক্রবর্তীর। তিনি নিজেই ওই বাতিস্তম্ভ স্পর্শ করেই দাঁড়িয়েছিলেন বিকেলে। তারপর বৃষ্টি হতেই এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন তিনি।
সূত্রের খবর, এদিন বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে টিউশনে গিয়েছিল রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ ফখরুদ্দিনের বড় ছেলে ফারজান। কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন ফারুখউদ্দিন। সম্প্রতি তিন মাসের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো ফারজান। ফারজানের একটি ছোট ভাইও রয়েছে। এদিন বিকালে ছেলের সঙ্গেই বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। মৃতের বাবার দাবি, তিনি তাঁর ছেলের পিছনেই ছিলেন। আচমকাই দেখেন জমা জলের মধ্যে ছেলের পা হড়কে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওই কিশোর রাস্তা লাগোয়া বাতিস্তম্ভটি ছুঁয়ে ফেলে। তখনই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যায় ফারজান। এদিকে ঘটনা দেখা মাত্রই এলাকার লোকজন বাঁশ দিয়ে ফারজানকে সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর বা কিশোরকে উদ্ধার করে প্রথমে দুটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে মেডিকেল কলেজ নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার মেয়রের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিল আলো বিভাগ। তাতে বলা হয়েছে যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে একটি জলের পাইপ আছে। সেখান থেকে টুলু পাম্প বসিয়ে জল চুরি করা হত। হুকিং করে সেই পাম্প ব্যবহার করে জল তুলত স্থানীয় বাসিন্দারা। তারজেরেই বাতিস্তম্ভ কোনওভাবে শর্ট-সার্কিট হয়ে গিয়েছে। তাতেই এই বিপত্তি।
প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই হরিদেবপুরে ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে হাত দিতেই বেঘোরে মৃত্যু হয় নীতীশ যাদব নামে এক কিশোরের। এ ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে। অন্যদিকে ২০২১ সালেও কার্যত একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিস। গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর দমদম বান্ধব নগরে বাতি স্তম্ভের খোলা তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল শ্রেয়া বনিক, অনুষ্কা নন্দী নামে দুই কিশোরীর। যা নিয়েও ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় প্রশাসনিক মহলে।