কলকাতা: সর্দি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল দেড় বছরের এক শিশু। তার বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীতে। জ্বরের পাশাপাশি শিশুটির শ্বাসকষ্টের সমস্যার ছিল। জানা গিয়েছে, এমস কল্যাণীতে ভর্তি ছিল শিশুটি। সেখানে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় শিশুটিকে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পর মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে ভর্তি ছিল শিশুটি। রবিবার ভোররাতে মৃত্যু হয়েছে তার। এর পরই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। যদিও মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি (Medical Superintendent cum Vice-Principal ) অঞ্জন অধিকারী জানিয়েছেন, অ্যাডিনো ভাইরাসে কোনও শিশু মারা যায়নি। যে শিশুটি সকালে মৃত্যু হয়েছে, এমস কল্যাণী থেকে রেফার করা হয়। ইউরিনালে সমস্যা ছিল। শ্বাসকষ্ট ছিল। অ্যান্টি বায়োটিক, ভেন্টিলেটরি সার্পোর্ট, পিকু-সহ সব ধরনের ব্যবস্থা করা হলেও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। অ্যাডিনোয় আক্রান্ত কিনা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় বলেও জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, শুধু মাত্র মেডিক্যাল কলেজে ফেব্রুয়ারি মাসে শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছে কমপক্ষে ১৬ শিশু। তার মধ্যে ২ জন অ্যাডিনো আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য জুড়ে গত কয়েক দিনে একাধিক অ্যাডিনো ভাইরাসে সংক্রমণের বিষয়টি সামনে এসেছে। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ৯ মাসের এক শিশু মৃত্যুর বিষয়টিও সামনে এসেছে। জ্বরের পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যে। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপট যখন বাড়তে তখন তা নিয়ন্ত্রণে সজাগ কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। পুরনিগমের চিকিৎসক এবং নার্সদের ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল অফিসারদের দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শিশুদের অভিভাবকের কথা শুনে পরীক্ষা করতে হবে। বাড়িতেই চিকিৎসা সম্ভব নাকি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, তা জানাতে হবে। শিশুর শারীরিক অবস্থা কেমন থাকছে সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে। বাড়িতে রাখলে অভিভাবকদের বুঝিয়ে দিতে হবে, কী দেখে তাঁরা সতর্ক হবেন। হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে শিশুর উপর নজর রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নার্সদেরও।