কলকাতা: চায়ের দোকানে হোক বা বাড়িতে কিংবা রকের আড্ডা! বাঙালি বরাবরই রাজনীতির চর্চা করতে ভালবাসেন। বরাবরই রাজনীতি নিয়ে সচেতন। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোথাও হয়ত এই বাঙালি- অবাঙালি ভোট ব্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তিত। কারণ কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে বারবার তিনি সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন, উস্কে দিয়েছেন বাঙালি-অবাঙলি ভোট। একাধিকবার দেখা গিয়েছে, অবাঙলি ভোটে বিজেপি-র আধিপত্য অব্যাহত। তাই কি পুজো উদ্বোধনে এসে এই নিয়ে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর গলায়? অবাঙালি ভোট নিয়ে চিন্তিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নির্বাচনের আগে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তাঁর গলায়। পরিসংখ্যান বলছে, অবাঙালি ভোট ব্যাঙ্করে বিজেপির আধিপত্য এখনও রয়েছে।
কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি বলেন, “সমস্ত ধর্ম, সমস্ত বর্ণ,সমস্ত সম্প্রদায় মিলেমিশে কাজ করবে। বাংলাটা এমনই। সমালোচকরা সমালোচনা করবেই। এটাই কাজ। তবে কে কী বলল তাতে আমাদের যায় আসে না। ফোস্কা পড়ে না। আমি এটুকু বিশ্বাস করি এখানে থাকার অধিকার সকলের আছে। তবে কেউ-কেউ বাংলার বদনাম করছেন। বাংলায় যাঁরা থাকবেন বাংলাকে নিজের ভাবুন। কেউ-কেউ ভোট বাক্সে বাঙালী-অবাঙালী করে দেয়।” নাম না করে বিরোধীদের তোপ মুখ্যমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার পর অবাঙালিদের দিকে কার্যত ইঙ্গিত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় থাকতে হলে বাঙালি সংস্কৃতীকে মর্যাদা দিয়ে থাকতে হবে। এই নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। আর কিছু পিছিয়ে গেলে দেখা যাবে, ২০১৪ সাল থেকেই বাংলায় বসবাসকারী বড় একটি অংশ বিজেপি-কে ভোট দিচ্ছে। এরপর ২০১৯ সালেও সেইটাই অব্যাহত ছিল। ফলে এর ফল ভোট বাক্সেও পড়েছে বারেবারে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও তার অন্যথা হয়নি। শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামেও অবাঙালি ভোটের অনেকাংশই গিয়েছে পদ্মশিবিরে বলে দাবি রাজনীতির কারবারিদের একাংশের। এই আবহে সামনেই রয়েছে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। তারও আগে রয়েছে ছ’টি বিধানসভায় উপভোট। আর কালীপুজোর উদ্বোধনে অবাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে গিয়ে মমতার গলায় এমন বার্তা কার্যত সেই আরও একবার সেই প্রশ্নই উস্কে দিচ্ছে।
বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এখন ওঁর কোনও বক্তব্যকেই মানুষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তুমি আর সেই সে তুমি। যে মমতাকে মানুষ একদিন স্বপ্নের মেঘ বালিকা ভেবেছিলেন, এখন তিনি ঠাকুমার ঝুলি।”