কলকাতা: কয়লাকাণ্ডের (Coal Scam) তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের হাতে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রাজ্যে নতুন কয়লা খনির সন্ধানে সমীক্ষার রিপোর্ট পৌঁছত কয়লা চক্রের মূল চাঁই অনুপ মাজি ওরফে লালার হাতে। সেই রিপোর্ট ধরেই নতুন নতুন খনির গহীন থেকে কালো সোনা তুলে আনতেন তিনি। এভাবেই কয়েক লক্ষ কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠেন তিনি। আর এ ক্ষেত্রে লালার ‘সাগরেদ’ ছিলেন ইসিএল আধিকারিকদের একাংশ।
ইসিএল প্রতি বছর একটি সমীক্ষা চালাত। তাদের লিজপ্রাপ্ত যে সমস্ত জমি রয়েছে, তার বাইরেও কয়লা পাওয়া যেতে পারে এমন সম্ভাব্য জমির তালিকা তৈরি করত তারা। এটি একেবারেই ইসিএলের ‘সিক্রেট ইনফরমেশন’। অথচ সিবিআই জানতে পেরেছে, লালার কাছে সে সমীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছত। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সে রিপোর্ট বিক্রি করতেন ইসিএলেরই কোনও কোনও আধিকারিক। এভাবে লালা ২৬৮টি জমি কেনে। ইতিমধ্যেই সিবিআই সেই জমির তালিকা আদালতে জমা দিয়েছে। সিবিআই সেই জমি বাজেয়াপ্ত করতে চায়। অর্থাৎ লালা শুধু ইসিএলের জমি থেকে কয়লা চুরি করেই ক্ষান্ত থাকেননি। ইসিএলের চিহ্নিত জমিও নিজের কব্জায় নেন।
আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দুকে ঢুকতে দেব না’, নন্দীগ্রাম দিবসের সকালে উত্তেজনা সোনাচূড়ায়
তবে সর্ষের মধ্যেই যে ভূত লুকিয়ে থাকে, আরও একবার সে প্রবাদই উঠে এল। ইসিএল আধিকারিকদের একাংশের সহযোগিতা ছাড়া লালার পক্ষে এ জমির হদিশ পাওয়া কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পুরুলিয়া, নিতুরিয়া, আসানসোল, বাঁকুড়া, রানিগঞ্জ, বীরভূম-সহ বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে এমন সব জমি। যার নীচে মিলেছে কালো সোনার হদিশ। গোয়েন্দারা জেনেছেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর ওই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পরেই জমি কিনতে তৎপর হয়ে পড়তেন লালা। তারপর তাতে খনন চালিয়ে হত কয়লা পাচার। কয়েক দফায় কেনা কয়েকশো একর জমির বাজার দর ১০০ কোটি ছাড়াতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। কাদের হাত দিয়ে ফাঁস কয়লা-সমীক্ষার রিপোর্ট? ইসিএল-এর সেই আধিকারিকদের খোঁজ করছে সিবিআই।