কলকাতা: জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল কমান্ড হাসপাতালের। সেনাবাহিনীর জন্য বরাদ্দ সেই হাসপাতালে অভিযুক্ত মন্ত্রীর চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় বলে আদালতের দ্বারস্থও হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, সেনা জওয়ানদের তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। প্রথমে নিম্ন আদালতে আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায়, হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কমান্ড হাসপাতাল। অবকাশকালীন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা ইডি-কে সমাধান সূত্র বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত ২ দিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যাবে কমান্ড হাসপাতালে। তার মধ্যে ইডি-কে অন্য কোনও বিকল্প হাসপাতালের কথা ভাবতে হবে।
কমান্ড হাসপাতালের আইনজীবী অনামিকা পাণ্ডের বক্তব্য, একজন সেনা যখন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন, তখন তাঁদের সব তথ্য সেখানে দিতে হয়। প্রচুর বাইরের লোক চলে এলে। সেই তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। নৌসেনার চিকিৎসাও এই হাসপাতালে হয় বলে উল্লেখ করেছেন আইনজীবী। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো অভিযুক্ত চিকিৎসা করাতে গেলে অনেক মানুষ একসঙ্গে ভিড় করেন, সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলেই দাবি কমান্ড হাসপাতালের।
কমান্ড হাসপাতালের আরও অভিযোগ, ইডি-র সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন সব মামলাতেও চোরাকারবারিদের চিকিৎসা বা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে। তাতেও আপত্তি রয়েছে কর্তৃপক্ষের। সেই সঙ্গে কমান্ড হাসপাতালের আইনজীবী এদিন উল্লেখ করেছে, কল্যানী এইমস, বিএসএফ সল্টলেকের মতো হাসপাতালও রয়েছে। সেখানে হতে পারে চিকিৎসা। , আদালতে জানান, কমান্ডের আইনজীবী অনামিকা পান্ডা।
সব শুনে বিচারপতি জানতে চান, কতদিন ছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়? ইডি-র আইনজীবী জানান, প্রতি একদিন অন্তর। কমান্ড ছাড়া আর কোথাও চিকিৎসা সম্ভব কি না, সেটাও জানতে চান বিচারপতি। একইসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, আজ কমান্ড হাসপাতাল যে নিরাপত্তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছে, বিএসএফ-এর হাসপাতালেও সেই একই প্রশ্ন উঠতে পারে।
ইডি মন্তব্য করেছে, দুটি কেন্দ্রীয় এজেন্সি এভাবে বিরোধ করতে পারে না। আর এইমস-এর যা দূরত্ব, তাতে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়। বাকি হাসপাতাল যথেষ্ট প্রস্তুত নয়। বিএসএফ হাসপাতালে যেতে হলে হাইকোর্টের নির্দেশ নিতে হবে বলে দাবি করেছেন ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী। আগামী ১৬ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।