
কলকাতা, শিলিগুড়ি, দার্জিলিং: পুজোর আগে থেকেই প্রবল দুর্যোগের সাক্ষী ছিল দক্ষিণবঙ্গ। এবার প্রকৃতির রুদ্ররোষে উত্তরবঙ্গ। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে একাধিক জেলায়। সবথেকে বেশি দুর্যোগের সাক্ষী রয়েছে পার্বত্য জেলাগুলি। অবস্থা খারাপ সিকিমেরও। ধস নেমে উত্তর সিকিমের লাচুং চু প্রায় বন্ধ! জলস্রোত পুরোপুরি আটকে গেলে বড় বিপদের আশঙ্কা। তৈরি হতে পারে কৃত্রিম লেক!
বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নিয়ে তিনি আজ প্রথমেই যাবেন হাসিমারা। তারপর সেখান থেকে যাবেন নাগরাকাটায়। আর বিপর্যস্ত উত্তরে পা রাখার আগে গোটা ঘটনাক্রমকে ম্য়ানমেড বললেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘দেশের প্রায় সব জায়গায় অতিবৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল ম্যানমেড বা পরিকল্পিত বন্যায় মানুষ মারা গিয়েছে। ফরাক্কা বা হলদিয়া যদি সময় মতো ড্রেজিং করত কিংবা ডিভিসি, পাঞ্চেত, মাইথন পলি সরিয়ে দিত, তা হলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।‘
আর কী বললেন তিনি? পড়ুন এখানে ক্লিক করে
একটা নিম্নচাপ কার্যত নাজেহাল করে দিচ্ছে সকলকে। উত্তরবঙ্গ তছনছের পাশাপাশি ডুবেছে অসমের জলদাপাড়া অভয়ারণ্যও। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে হলং নদীর উপর ব্রিজ। তারপর রীতিমতো দড়ি দিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে সকলকে।
বিস্তারিত পড়ুন: Jaldapara: জলদাপাড়ায় আটকে বহু পর্যটক, পে-লোডার-জেসিবি দিয়ে চলছে উদ্ধার
বিস্তারিত পড়ুন: North bengal disaster: দিদার সঙ্গে মিরিক গিয়েছিল ঘুরতে, পাহাড় ধসে ঘুমের মধ্যেই শেষ তৃতীয় শ্রেণির আরুশি
সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উঠে পড়লেন বাগডোগরা যাওয়া বিমানে। আর তার আগে তৃণমূলের দিকে কড়া ভাষার আক্রমণ।
কী বললেন শমীক? পড়ুন এখানে ক্লিক করে
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বর্ষা বিদায় নিচ্ছে না দেশ থেকে। বরং নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে, বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। গত সপ্তাহ শেষে এই দুর্যোগ দেখেছে উত্তরবঙ্গও। দার্জিলিং, মিরিকে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমেছে। কমপক্ষে ২৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, উত্তরবঙ্গের আকাশ থেকে কেটে গিয়েছে দুর্যোগের মেঘ। আর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
বিস্তারিত পড়ুন: উত্তরের আবহাওয়া শোধরাতেই এবার দক্ষিণে ‘খেলা’ শুরু, কয়েক ঘণ্টাতেই আবার তুমুল বৃষ্টি নামবে?
উত্তরের আকাশে দুর্যোগের মেঘ কাটতেই পর্যটকদের জন্যও সুখবর মিলেছে। গতকাল রাতেই খুলে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (NH10)। দার্জিলিং-কালিম্পং যাওয়ার রাস্তাও খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে হিলকার্ট রোড, পাঙ্খাবাড়ি রোডও। এই রাস্তা দিয়েই পর্যটকদের নেমে আসতে বলা হয়েছে। পাহাড়ে ওঠানামায় কোনও সমস্যা হবে না। তবে রোলিংয়ে রাস্তা এখনও বন্ধ। পুলিশের পরামর্শ, যারা আজ পাহাড়ে ওঠার বা নামার চেষ্টা করবেন, তারা যেন হাতে সময় নিয়ে বের হন, কারণ বিস্তর যানজট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। রবিবারই প্রকৃতির রুদ্র রূপ দেখেছে বঙ্গবাসী। বানভাসী উত্তরবঙ্গের একের পর এক জেলা। ভেঙে গিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সেতুগুলি। একাধিক জায়গায় নেমেছে ধস। মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে পৌঁছেছে ২৮-এ। আজ উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে সোমবার সকালেই দুর্যোগের মেঘ কেটে রোদ ঝলমলে উত্তরবঙ্গ।
রবিবার রাজভবনের তরফে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, ব়্যাপিড অ্য়াকশন সেলের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকছেন অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সন্দীপ সিং রাজপুত। উত্তরবঙ্গের দুর্গত মানুষ যেকোনও সমস্যার কথা জানাতে এখানে ফোন করতে পারেন। ফোন নম্বর হল ০৩৩-২২০০১৬৪১। এছাড়া মেইল করেও নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন সবাই। ব়্যাপিড অ্যাকশন সেলের মেইল আইডি হল peaceroomrajbhavan@gmail.com। উত্তরবঙ্গে দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: উত্তরবঙ্গের দুর্গতদের জন্য রাজভবনে ব়্যাপিড অ্যাকশন সেল, প্রস্তুত পিসরুমও
আগামিকাল বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। আর ঠিক তার আগের দিন অর্থাৎ আজ মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অনুরোধ’ চিঠি লিখলেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। কী লিখলেন তিনি? মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে কী আর্জি রাখলেন পাহাড়ের এই বিজেপি সাংসদ?
পড়ুন এই লিঙ্কে: মমতাকে ‘অনুরোধ’ চিঠি দার্জিলিঙের সাংসদের
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের সুলকা পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বন্যায় বিপর্যস্ত। জলমগ্ন এলাকায় ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ২৫ জন নিখোঁজ। ঘটনাস্থলে এনডিআরএফ-এর টিম পৌঁছেছে।যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় দড়ির সাহায্যে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন মালবাজার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক। সবমিলিয়ে উত্তরের দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭।
বৃষ্টি বিপর্যস্ত দার্জিলিংয়ে ভূমিধসে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১৮ জন ভারতীয় আর ৫ জন নেপালের নাগরিক। ভারত-নেপাল সীমান্তে ভূমিধসে নেপালের ওই ৫ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
বাতিল করা হয়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। একইসঙ্গে বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ বদলে ফেলা হয়েছে। মূল বদলগুলিই হয়েছে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে। রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানান হয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন- ভয় বাড়ছে উত্তরবঙ্গে! বাতিল একাধিক, ঘুরপথে চলছে অনেক দূরপাল্লার ট্রেন
উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স হ্যান্ডেলেই উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
Deeply pained by the loss of lives due to a bridge mishap in Darjeeling. Condolences to those who have lost their loved ones. May the injured recover soon.
The situation in Darjeeling and surrounding areas is being closely monitored in the wake of heavy rains and landslides. We…
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2025
বিস্তারিত পডুন : দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকে দুর্যোগ! ‘হাওয়া বদলের’ জেরে উদ্বিগ্ন মোদী
বিস্তারিত পড়ুন: Mamata Banerjee on north bengal: পর্যটকরা যেখানে আছে থাকবেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে না, হোটেল মালিকরা যেন চাপ না দেন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বিস্তারিত পড়ুন: ‘দ্রুত ব্যবস্থা নিন’, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যসচিবের কাছে আর্জি শুভেন্দুর
কুর্তি, জলপাইগুড়ি
৩৭০ মিমি
ডায়ানা, জলপাইগুড়ি
৩৪৪ মিমি
বানারহাট, জলপাইগুড়ি
৩১০ মিমি
গজলডোবা, জলপাইগুড়ি
৩০২ মিমি
মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার
২৬৪ মিমি
দার্জিলিং
২৬১ মিমি
নেওড়া, জলপাইগুড়ি
২৪৫ মিমি
লাভা, কালিম্পং
২০২ মিমি
বিজনবাড়ি, দার্জিলিং
১৫৪ মিমি
বিস্তারিত পড়ুন: Weather Latest Update: দরজায় ধাক্কা মারছে নদী, খোলা যাচ্ছে না গেট, বাঁধ ভাঙলেই…, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সতর্ক করল ভূটান
মিরিক জুড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নেমেছে ধস। মিরিকের বস্তিতে ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে ২ বাসিন্দার। পরে এই সংখ্যা বেড়ে ৯-এ পৌঁছয়। দুর্যোগের জেরে বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও। দার্জিলিং-কালিম্পংয়েও যোগাযোগের একাধিক রাস্তা বন্ধ। দার্জিলিং বিশপ হাউসের কাছেও ধস নেমেছে। সেখানে পাথর সরানোর কাজ চলছে।
বিস্তারিত পড়ুন: উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ অবস্থা, লাগাতার বৃষ্টিতে ভেঙে গেল দুধিয়া সেতু, মিরিকে ধস নেমে মৃত্যু ২ জনের
নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছিল টানা বিগত কয়েকদিন ধরে। শনিবারও প্রবল বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির জেরেই বিজনবাড়ির পুলবাজারে ভাঙল রাস্তা। বহু পর্যটকের আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভেঙে গিয়েছে দুধিয়া সেতুও। রাতের একটানা বৃষ্টিতে লোহার সেতুর একাংশ ভেঙে যায়। শিলিগুড়ি-মিরিক সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এর জেরে। ধস নেমে ঋষিখোলা, পেডংয়ের অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
পড়শি দেশ নেপালে দুর্যোগ। নিম্নচাপের জেরে তুমুল বৃষ্টি, আর সেই বৃষ্টিতে নেপালে বিপর্যয়। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নেপালের কোশী, গণ্ডক, বাগমতীর মতো একাধিক নদী। এই জলে শুধুমাত্র নেপালের বিপদ নয়। নেপাল থেকে আসা জলে বিহারেও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিস্তারিত পড়ুন: তুমুল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে নেপাল, ২ দিন ছুটি ঘোষণা সরকারের, বাংলার পাশেই বন্যা হবে না তো?
উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ অবস্থা
বিস্তারিত পড়ুন: West Bengal Weather: ‘বাজ পড়ার সে কি আওয়াজ, যেন আকাশ ফাটছে’, ধসে বন্ধ রোহিনী রোড, মিরিকে মৃত্যু বেড়ে ৯
আজ, রবিবার কলকাতায় দুর্গাপুজো কার্নিভাল। আর কার্নিভালের আগের রাতেই মেঘের তর্জন-গর্জন। রাতের কলকাতায় বজ্রগর্ভ মেঘের (Thundercloud) হানা। কলকাতা ও শহরতলিতে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি হল। ভোর পর্যন্ত চলল সেই বৃষ্টি। তবে শুধু তো বৃষ্টি নয়, সঙ্গে লাগাতার বজ্রপাতও হল।
বিস্তারিত পড়ুন: কলকাতায় বজ্রগর্ভ মেঘের হানা, রাতভর তুমুল বৃষ্টি, ঘনঘন পড়ল বাজ
ইতিমধ্যেই বাংলার সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে ভুটানের প্রশাসনের তরফে। ওয়াং নদীর টালা বাঁধের গেট না খোলায় বিপদের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। টালা বাঁধের জল উপচে বইছে নদী। জলের চাপ আরও বাড়লে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সা। জারি লাল সতর্কতা। শিলিগুড়ি-মিরিক সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। একটানা বৃষ্টির জেরে ভেঙে পড়েছে দুধিয়া সেতু। ধস নেমে ঋষিখোলা, পেডংয়ের অনেক রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কার্যত বানভাসি নাগরাকাটাও।
বিজনবাড়ির পুলবাজারে ভেঙে গিয়েছে রাস্তা। বহু পর্যটকের আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিরিক জুড়ে একাধিক অঞ্চলে নেমেছে ধস। শুধুমাত্র মিরিকেই এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পাশাপাশি সুখিয়াপোখরিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিম্নচাপের জেরে এদিন আরও বৃষ্টির আশঙ্কা আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে। জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত ভাসছে ডুয়ার্স। ভুটানের জলে সেখানে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।