কলকাতা: দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো পার হয়েছে সবে। এখনও কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, ছটপুজো বাকি। রয়েছে বেশ কিছু জায়গায় ভোটপুজোও। এদিকে করোনার (Covid19) গ্রাফ যে ভাবে উঠছে, তা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে। স্বাস্থ্য দফতর বলছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব যেখানে পড়েনি, বিপদ সেখানেই সব থেকে বেশি।
পুজো পার হতেই কলকাতা-সহ বাংলায় বাড়ছে করোনা। এই ছবি উস্কে দিচ্ছে প্রশ্ন, তবে কি সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আরও কাছে? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুধু পূর্ব মেদিনীপুরে পজিটিভিটি রেট ছিল ৩.৫ শতাংশ। দ্বিতীয় সপ্তাহে পাঁচ স্বাস্থ্য জেলায় পজিটিভিটি রেট তিন শতাংশ পার করে যায়। তালিকায় ছিল দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, বিষ্ণুপুর, বসিরহাট ও পূর্ব মেদিনীপুরের নাম।
স্বাস্থ্য দফতরের সেন্টিনেল সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে চার স্বাস্থ্য জেলায় পজিটিভিটি রেট তিন শতাংশ পার করে যায়। তালিকায় ছিল কালিম্পং, দার্জিলিং, বিষ্ণুপুর, হুগলির নাম। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকেই সংক্রমণের গ্রাফে ওঠানামা শুরু হয়। পুজো মিটতেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বেলা সতর্ক হওয়াই একমাত্র বাঁচার পথ।
ইতিমধ্যেই পুরসভার বৈঠকে শহরের কোয়ারেনটাইন সেন্টারগুলি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভার তরফে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, শহরের একটি কোয়ারেনটাইন সেন্টার এবং দু’টি সেফ হোম খুলে দেওয়া হচ্ছে। ট্যাংরা চম্পামণি মাতৃ সদন সেফ হোম, হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন সেফ হোম এবং তপসিয়ার কোয়ারেনটাইন সেন্টার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনের সেফ হোমটি মা এবং শিশুদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা পর্যালোচনা করে দেখেছেন মা ও শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।
পুরকর্তারাও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে পুজোর মরসুমে যে ভাবে ভিড় বেড়েছে, তার জেরেই ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে শুরু করায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যদিও সংক্রমণ যে বাড়বে তার আগাম আশঙ্কা করেছিলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ শুভ্রজ্যোতি ভৌমিকের কথায়, এ তো হওয়ারই ছিল। পুজোর সময় নাইট কার্ফু তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে এটা তৃতীয় ঢেউয়ের আগমনী কি না তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে এই নাইট কার্ফু কালীপুজো বা আগামী উৎসবের দিনগুলিতে যেন কোনও ভাবেই না তোলা হয়, মত বিশেষজ্ঞদের।
স্বাস্থ্য দফতরের শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, ফের দৈনিক সংক্রমণ ৮০০-র উপরে। এই নিয়ে টানা তিন দিন ৮০০ পার করল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৮৪৬ জন। এর আগে বৃহস্পতিবার ও বুধবার এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮৩৩ ও ৮৬৭।
আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুরের মর্যাদা প্রত্যাহার ইউজিসির, রাজনীতিই কারণ, দাবি জুটার