কলকাতা: দেশে অনেকটাই কমেছে কোভিড সংক্রমণ। কিন্তু, তাও নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে কই! ফের বিমানবন্দরে (Kolkata International Airport) করোনার থাবা। কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই গামী বিমানে করোনা আক্রান্ত তিন যাত্রীর খোঁজ মিলল। বুধবার সন্ধে ৭ টা বেজে ৫ মিনিটে ইন্ডিগো বিমান প্রস্থান করার আগে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের নির্দেশিকা মেনে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হয়। তাতেই ওই তিন যাত্রীর শরীরে সংক্রমণের হদিশ মেলে। এরপর পুনরায় তাঁদের পরীক্ষা করানো হলে ফের তিনজনেরই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশিকা মেনেই ওই তিন যাত্রীকে একান্তবাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে দুবাইগামী ইন্ডিগো বিমান 6E 28-এ ওই তিনযাত্রী যাত্রা করছিলেন। তাঁদের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়। তাঁদের পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। প্রত্যেক যাত্রীকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিং জন্য পাঠানো হয়েছে।
কিছুদিন আগেও কলকাতা বিমানবন্দরে করোনা আক্রান্ত যাত্রীর হদিশ মিলেছিল। ফ্লাই এমিরেটসের বিমান ek573 একজন যাত্রী ও ফ্লাই দুবাই বিমান FZ 460-এ একজন যাত্রীর মধ্যে উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই দ্রুত তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
জানুয়ারি মাসেও কলকাতা থেকে দুবাই গামী তিনটি বিমানের মোট ১৬ জন যাত্রীর নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মেলে। কলকাতা থেকে দুবাই গামী ইন্ডিগো 6E027 বিমানের যাত্রী এক ব্রিটিশ নাগরিক সহ মোট ৬ জন করোনা পজিটিভ হন। পরে ফ্লাই দুবাই বিমান FZ0460-এর সাত যাত্রীর শরীরেও মেলে ভাইরাসের উপস্থিতি। সেই সাতজনই ভারতীয় নাগরিক। এ ছাড়া এমিরেটসের বিমান ek571-র তিন ভারতীয় যাত্রীও করোনা আক্রান্ত হন। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিধি অনুসারে এদের কাউকেই বিমানে উড়তে দেওয়া হয়নি। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাঁদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে।
ওই মাসেই ফের ১১ জন যাত্রীর আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে। কলকাতা থেকে দুবাই গামী আন্তর্জাতিক বিমানে ওই ১১ জন ভারতীয় যাত্রীর ওড়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরে পরীক্ষা হতেই জানা যায়, তাঁরা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা (Corona in Bengal) সংক্রমিত হয়েছেন ২হাজার ৭২৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। সামান্য বেড়েছে পজিটিভিটি রেট। গত ২৪ ঘণ্টায় পজিটিভিটি রেট ৪.৬১ শতাংশে। বুধবার স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৫০ জন। সুস্থতার হার ৯৭.৮৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ হাজার ১০৪ টি। গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৬ লক্ষ ২১ হাজার ৬০৩। দেশের মোট আক্রান্তের ৩.৯০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ওমিক্রন প্রতিরোধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। বিদেশ থেকে আগত প্রত্যেক বিমানযাত্রীকে শেষ ১৪ দিনের ‘ট্রাভেল হিস্ট্রি’ বাধ্যতামূলকভাবে জমা করতে হবে। আপলোড করতে হবে করোনা পরীক্ষার ফলাফলও। ১ ডিসেম্বর থেকেই সেই নিয়ম চালু হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রের এয়ার সুবিধা পোর্টালে একটি সেল্ফ ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণ করে অনলাইনে জমা করতে হবে বিদেশ থেকে আগত প্রত্যেক যাত্রীকে। সেই সঙ্গে জমা করতে হবে শেষ দুই সপ্তাহের ট্রাভেল হিস্ট্রি। যাত্রা শুরুর ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে এবং রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই বিমান যাত্রা করতে পারবেন। এর করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও অনলাইনে জমা করতে হবে। এর পাশাপাশি ওই করোনা পরীক্ষার রিপোর্টটি যে ভুয়ো নয়, সেই সংক্রান্ত একটি ডিক্লারেশনও জমা করতে হবে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে কোনওরকম হেরফের করা হলে, ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।