কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদিত ‘প্রেসক্রিপশন’ – গদ্দারদের বহিষ্কার, ফ্যান পেজে নিষেধাজ্ঞা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৌরভ পাল

Aug 25, 2021 | 2:20 PM

CPIM West Bengal: গদ্দার’-দের নিয়ে পার্টি এবার চরমপন্থী অবস্থানে। বিরোধী আঁতাতে দোষীকে বহিষ্কারের নিদানের উল্লেখ সিপিএমের চিঠিতে।

Follow Us

প্রদীপ্ত কান্তি ঘোষ

বিধানসভায়? দূরবীন দিয়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। আন্দোলনে? নেই। পথে প্রতিবাদে? থেকেও অমিল। সিপিএম তাহলে কোথায়? সিপিএম আছে হিমশীতল বৈঠকে, তাত্ত্বিক আলোচনায় আর খবরে।

বিধানসভায় ভরাডুবির ময়নাতদন্ত। তারুণ্য বনাম বৃদ্ধতন্ত্রের দ্বন্দ্ব। বয়সের ‘বেড়াজাল’। সংযুক্ত মোর্চা গঠনের ঠিক, ভুল আর শত্রু চিহ্নিতকরণের পর সিপিএম এবার সম্মেলনের পথে। লক্ষ্য ফের ‘ক্ষমতা দখল’। আর তার জন্য আসন্ন পৌরনির্বাচনের আগেই সংগঠনের কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য সিপিএম।

চলতি মাসের ৬, ৭ ও ৮ তারিখ মিলিয়ে ৭২ ঘণ্টার যে ব্রেন স্টর্মিং সেশনে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবরা সামিল হয়েছিলেন, তা এবার কমরেডদের ঝোলায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ‘অসক্ত’ সংগঠনকে ‘সুস্থ’ করতে কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদিত ‘প্রেসক্রিপশন’ চিঠি হয়ে পৌঁছে যাবে জেলা, এরিয়া কমিটি আর ব্রাঞ্চের ঠিকানায়। প্রেরক রাজ্য কমিটি, গ্রাহক প্রত্যেক পার্টি সদস্য।

এখনও পর্যন্ত ১৯ ও ২৪ পাতার ২ টি চিঠি রাজ্য কমিটি ছাপিয়ে উঠতে পেরেছে। যার একটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ভোট পরবর্তী পর্যালোচনা’ এবং অন্যটি ‘সম্মেলন কেন্দ্রিক নির্দেশাবলী’।

গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস

২ নম্বর চিঠির ৩ নম্বর পাতায় ‘পার্টি সম্মেলন আয়োজন সংক্রান্ত নির্দেশিকা’-য় রাজ্য কমিটি জেলা, এরিয়া ও ব্রাঞ্চগুলোকে কোভিডবিধি নিয়ে বাড়তি সতর্কতা দিয়েছে। যেখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে — সম্মেলন কক্ষে ‘কমরেডদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার আবশ্যক।’ পঁয়তাল্লিশ উর্ধ্বদের জন্য কোভিডের জোড়া ডোজ় না থাকলে ‘নো এন্ট্রি’। কোভিড আক্রান্ত পার্টি সভ্য, নেতা কোনওভাবেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। করা যাবে না বড় মিছিল, জনসভা। স্বাস্থ্যবিধিকে সর্বাধিকার দিয়ে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে যা যা করণীয় হিসেবে সিপিএম তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে তা হল —

শ্রমিক, খেত মজুর সহ সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও তফসিলি এলাকায় নিবিড় যোগাযোগ বৃদ্ধি। শুধু দুয়ারে পৌঁছলেই হবে না, প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি রাতও কাটাতে হবে কমরেডদের।

শুধু পার্টি করলেই চলবে না। এবার পাড়াভিত্তিক ক্লাবেও ঢুকতে হবে। পুজো, পার্বণের কথা উল্লেখ না করলেও সামাজিক অনুষ্ঠানে যে ‘অসামাজিক’ হয়ে থাকা যাবে না, তারই উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।

আশু কর্তব্যের মধ্যে উল্লেখিত রয়েছে পার্টি সভ্যের সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটির কথাও। সিপিএম-এ সবসময়ই পার্টি বড়। ব্যক্তি প্রচারের জায়গাই নেই। সেই নীতিতে আরও কঠোর অবস্থান নিল সিপিএম। নেতানেত্রীর নামে কোনও ফ্যান পেজ থাকবে না, চিঠিতে উল্লেখ সিপিএমের।  অর্থাৎ,  শতরূপ ঘোষ, দীপ্সিতা ধর, ঐশী ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্যরা যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, পার্টির কোনও নেতানেত্রীরই ফ্যান পেজ বিরোধী সিপিএম।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) – পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি — চিঠি ২ (১৭ নম্বর পাতা)

উল্লেখযোগ্যভাবে ‘গদ্দার’-দের নিয়ে পার্টি এবার চরমপন্থী অবস্থানে। বিরোধী আঁতাতে দোষীকে বহিষ্কারের নিদানের উল্লেখ সিপিএমের চিঠিতে। এখানেই শেষ নয়, তাৎপর্যনীয় ভাবে সংযুক্ত মোর্চা, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এসব অবস্থানের নামগন্ধ তো দূর, সিপিএম-এর স্বাধীন শক্তির বিকাশ ও বামফ্রন্টকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্য কমিটির চিঠিতে।

 

প্রদীপ্ত কান্তি ঘোষ

বিধানসভায়? দূরবীন দিয়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। আন্দোলনে? নেই। পথে প্রতিবাদে? থেকেও অমিল। সিপিএম তাহলে কোথায়? সিপিএম আছে হিমশীতল বৈঠকে, তাত্ত্বিক আলোচনায় আর খবরে।

বিধানসভায় ভরাডুবির ময়নাতদন্ত। তারুণ্য বনাম বৃদ্ধতন্ত্রের দ্বন্দ্ব। বয়সের ‘বেড়াজাল’। সংযুক্ত মোর্চা গঠনের ঠিক, ভুল আর শত্রু চিহ্নিতকরণের পর সিপিএম এবার সম্মেলনের পথে। লক্ষ্য ফের ‘ক্ষমতা দখল’। আর তার জন্য আসন্ন পৌরনির্বাচনের আগেই সংগঠনের কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য সিপিএম।

চলতি মাসের ৬, ৭ ও ৮ তারিখ মিলিয়ে ৭২ ঘণ্টার যে ব্রেন স্টর্মিং সেশনে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবরা সামিল হয়েছিলেন, তা এবার কমরেডদের ঝোলায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ‘অসক্ত’ সংগঠনকে ‘সুস্থ’ করতে কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদিত ‘প্রেসক্রিপশন’ চিঠি হয়ে পৌঁছে যাবে জেলা, এরিয়া কমিটি আর ব্রাঞ্চের ঠিকানায়। প্রেরক রাজ্য কমিটি, গ্রাহক প্রত্যেক পার্টি সদস্য।

এখনও পর্যন্ত ১৯ ও ২৪ পাতার ২ টি চিঠি রাজ্য কমিটি ছাপিয়ে উঠতে পেরেছে। যার একটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ভোট পরবর্তী পর্যালোচনা’ এবং অন্যটি ‘সম্মেলন কেন্দ্রিক নির্দেশাবলী’।

গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস

২ নম্বর চিঠির ৩ নম্বর পাতায় ‘পার্টি সম্মেলন আয়োজন সংক্রান্ত নির্দেশিকা’-য় রাজ্য কমিটি জেলা, এরিয়া ও ব্রাঞ্চগুলোকে কোভিডবিধি নিয়ে বাড়তি সতর্কতা দিয়েছে। যেখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে — সম্মেলন কক্ষে ‘কমরেডদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার আবশ্যক।’ পঁয়তাল্লিশ উর্ধ্বদের জন্য কোভিডের জোড়া ডোজ় না থাকলে ‘নো এন্ট্রি’। কোভিড আক্রান্ত পার্টি সভ্য, নেতা কোনওভাবেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। করা যাবে না বড় মিছিল, জনসভা। স্বাস্থ্যবিধিকে সর্বাধিকার দিয়ে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে যা যা করণীয় হিসেবে সিপিএম তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে তা হল —

শ্রমিক, খেত মজুর সহ সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও তফসিলি এলাকায় নিবিড় যোগাযোগ বৃদ্ধি। শুধু দুয়ারে পৌঁছলেই হবে না, প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি রাতও কাটাতে হবে কমরেডদের।

শুধু পার্টি করলেই চলবে না। এবার পাড়াভিত্তিক ক্লাবেও ঢুকতে হবে। পুজো, পার্বণের কথা উল্লেখ না করলেও সামাজিক অনুষ্ঠানে যে ‘অসামাজিক’ হয়ে থাকা যাবে না, তারই উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।

আশু কর্তব্যের মধ্যে উল্লেখিত রয়েছে পার্টি সভ্যের সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটির কথাও। সিপিএম-এ সবসময়ই পার্টি বড়। ব্যক্তি প্রচারের জায়গাই নেই। সেই নীতিতে আরও কঠোর অবস্থান নিল সিপিএম। নেতানেত্রীর নামে কোনও ফ্যান পেজ থাকবে না, চিঠিতে উল্লেখ সিপিএমের।  অর্থাৎ,  শতরূপ ঘোষ, দীপ্সিতা ধর, ঐশী ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্যরা যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, পার্টির কোনও নেতানেত্রীরই ফ্যান পেজ বিরোধী সিপিএম।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) – পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি — চিঠি ২ (১৭ নম্বর পাতা)

উল্লেখযোগ্যভাবে ‘গদ্দার’-দের নিয়ে পার্টি এবার চরমপন্থী অবস্থানে। বিরোধী আঁতাতে দোষীকে বহিষ্কারের নিদানের উল্লেখ সিপিএমের চিঠিতে। এখানেই শেষ নয়, তাৎপর্যনীয় ভাবে সংযুক্ত মোর্চা, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এসব অবস্থানের নামগন্ধ তো দূর, সিপিএম-এর স্বাধীন শক্তির বিকাশ ও বামফ্রন্টকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্য কমিটির চিঠিতে।

 

Next Article