কলকাতা : কয়লা কাণ্ডে (Coal Scam Case) ইডির তল্লাশি। ফের কোটি টাকা উদ্ধার শহরে। বালিগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের (ED)। টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিক্রম শিকারিয়া নামে ওই ব্যবসায়ীকে। চলে লাগাতার তল্লাশি। সেখান থেকেই আনুমানিক কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। কয়লাকাণ্ডে দিল্লি থেকে আসা ইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল এদিন সকাল থেকে বালিগঞ্জ এবং আর্ল স্ট্রিটের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায়। সূত্রের খবর, যে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এই বিপুল টাকা উদ্ধার হয়েছে তাঁর বাড়ি ৫/এ আর্ল স্ট্রিটে। বাড়ির পাশাপাশি ওখানে তাঁর একটি অফিস রয়েছে বলে খবর। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ চলে ইডি-র তল্লাশি অভিযান। এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস নিয়ে যথাযথ উত্তর দিতে না পারার কারণেই তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। ইডির তদন্তকারীদের দাবি, কয়লা কাণ্ডে যে কালো টাকা বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছেছিল সেই টাকাই গিয়েছিল এই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। নির্মাণ ব্যবসার পাশাপাশি ওই ব্য়ক্তির আরও একাধিক ব্যবসা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। রয়েছে ফুড চেনের ব্যবসাও। রয়েছে একটি ধাবা। তিনি শাসকদলের বেশ ঘনিষ্ঠ বলেও সূত্রের খবর। যোগাযোগ রয়েছে একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গেও।
এলাকার বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন দীর্ঘদিন থেকে তাঁরা বিক্রম শিকারিয়াকে ব্যবসায়ী হিসাবেই চেনেন। বিনিয়োগ করেন নির্মাণ ব্যবসায়। ইতিমধ্যেই সেই নির্মাণকারী সংস্থার নামও উঠে এসেছে ইডি-র তদন্তকারীদের হাতে। এমনকী তাঁর যে রাজনৈতিক যোগাযোগও রয়েছে তা জানেন এলাকার বাসিন্দারা। শাসকদলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে এলাকার মানুষেরা তাঁকে দেখেছেন বলেও জানাচ্ছেন। শাসকদলের হিন্দি সেলের সদস্য হিসাবে তিনি বেশ কয়েকবার শাসকদলের একাধিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন বলে খবর। ওই নেতাদের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর ব্যবসায়িক লেনদনও রয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও সেই নেতারা কারা সে বিষয়ে এখনও বিশেষ কিছু খোলসা করেনি ইডি-র তদন্তকারীরা। তবে তাঁরা দক্ষিণ কলকাতারই নেতা বলে সূত্রের খবর।
ইডি-র তদন্তকারীদের অনুমান, যে টাকা বেআইনি কয়লা ব্যবসা থেকে উঠে এসেছিল তারই একটা অংশ এই ব্যবসায়ীর হাত ধরে সাদা করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই ব্যক্তির মাধ্যমেই কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়। তবে ঠিক কোন কোন খাতে বিনিয়োগ হয়েছিল তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “পাথর-বালি-গরুর টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে এদিক ওদিক গিয়েছে। এই তদন্ত আরও অনেকদূর যাবে। শুধু বাংলা নয়, বাংলায় বাইরেও এই টাকা গিয়েছে। বিদেশেও গিয়েছে। যত তাড়াতাড়ি এই বদ রক্ত বেরিয়ে যায় ততই সমাজের ভাল।”