RG Kar: মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ নেওয়ার কারণেই মৃত্যু আর জি করের চিকিৎসক পড়ুয়ার

Sourav Dutta | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Aug 12, 2023 | 7:16 PM

R G Kar: শুভ্রজ্যোতিকে অবসাদের ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। আর সেই ওষুধের প্রতিক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। চিকিৎসক পড়ুয়ার ডেথ সার্টিফিকেটেও উল্লেখ রয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের কারণেই মৃত্যু হয়েছে।

RG Kar: মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ নেওয়ার কারণেই মৃত্যু আর জি করের চিকিৎসক পড়ুয়ার
শুভ্রজ্যোতি দাস
Image Credit source: TV-9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: যাদবপুরের হস্টেলে পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু ঘিরে তোলপাড় শিক্ষা মহল। আর এরই মধ্যে আর জি কর হাসপাতালের এক চিকিৎসক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আর জি কর হাসপাতালের ইন্টার্ন শুভ্রজ্যোতি দাসের মৃত্যু ঘিরে উঠে আসছে মানসিক অবসাদের তত্ত্ব। মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন আর জি করের ওই বছর তেইশের চিকিৎসক পড়ুয়া। শুভ্রজ্যোতিকে অবসাদের ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। আর সেই ওষুধের প্রতিক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। চিকিৎসক পড়ুয়ার ডেথ সার্টিফিকেটেও উল্লেখ রয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের কারণেই মৃত্যু হয়েছে।

জানা যাচ্ছে, শুভ্রজ্যোতি নিমতায় তাঁর কাকুর সঙ্গে থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শুভ্রজ্যোতিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জরুরি বিভাগে বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে প্রথমে মেডিসিনে স্থানান্তর, পরে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবারই মৃত্যু হয় ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার।

মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার তাঁকে শেষবার দেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। বুধবারও শুভ্রজ্যোতির কোনও খোঁজ পাননি তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের লোকেরা ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার ঘরে ঢুকে দেখেন, তিনি অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন। পরিবারের লোকেরা বলছেন, শুভ্রজ্যোতি ডাক্তারিতে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই নার্ভের সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনার পর তা আরও বাড়ে এবং ক্রমে মানসিক অবসাদে চলে যান তিনি। বাড়িতেও সেভাবে কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। সবসময় নিজের পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। সেই কারণে কেউ তাঁকে বিশেষ বিরক্তও করতেন না। কিন্তু বুধবার গোটা দিন দেখা না পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার যখন পরিবারের লোকেরা শুভ্রজ্যোতির ঘরে ঢোকেন, তখন দেখেন এই কাণ্ড।

এদিকে বৃহস্পতিবার চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃত্যুর পর থেকেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। আর এবার টিভি নাইন বাংলার হাতে এসেছে শুভ্রজ্যোতির ডেথ সার্টিফিকেট ও ইনজুরি রিপোর্ট। কী বলা হচ্ছে সেখানে? জানা যাচ্ছে,  শুভ্রজ্যোতিকে অবসাদের ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছিল। আর সেই ওষুধের প্রতিক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের কারণেই শুভ্রজ্যোতির মৃত্যু, স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে।

মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার ইনজুরি সার্টিফিকেট

মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার ডেথ সার্টিফিকেট

তবে কী কারণে ওই চিকিৎসক পড়ুয়া মানসিক অবসাদের মধ্যে ভুগছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, যাদবপুরের হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাতেও প্রথম দিকে মানসিক অবসাদের একটি তত্ত্ব উঠে আসতে শুরু করেছিল। দু’টি পৃথক ক্ষেত্রে পর পর এমন দু’টি ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।

পড়ুয়াদের মনের মধ্যে কী চলছে, তা বোঝার জন্য শিক্ষকদের আরও উদ্যোগী হওয়ার বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। গতকালই যাদবপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে মন্তব্য করার সময় এই কথা বলেছিলেন তিনি। পড়ুয়াদের মন বুঝতে প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিনদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার গুরুত্বের কথাও বুঝিয়েছিলেন তিনি।

আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন এমন ঘটল অধ্যক্ষ ভাল বলতে পারবেন। আমি অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। কোন‌ও কারণে যোগাযোগ হয়নি। আমি আবার অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করব।‌ প্রয়োজনে ডিএম‌ই’র সঙ্গেও কথা বলব।” ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী, চিকিৎসক পড়ুয়াদের মধ্যে অবসাদ যাতে কাজ না করে তার জন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকে তাঁদের পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা।