কলকাতা: কলকাতায় ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গি (Dengue in Kolkata) আক্রান্তের সংখ্যা। এদিকে এরমধ্যে এবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বারো বছরের এক কিশোরের। মৃত কিশোরের বাড়ি কালীঘাটে (Kalighat)। এ খবরেই নতুন করে উদ্বেগ বেড়েছে কলকাতার (Kolkata) স্বাস্থ্য মহলে। সূত্রের খবর, বিগত পাঁচদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল বিশাখ মুখোপাধ্যায় নামে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্র। বর্তমানে ভর্তি ছিল বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে কিশোরের মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে পরিবারের সদস্য়দের ভূমিকা নিয়েও। অভিযোগ, কিশোরের বাড়ির পাশে পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও জ্বর হওয়ার পর কিশোরের রক্ত পরীক্ষা করায়নি তাঁর পরিবার।
উদ্বেগ প্রকাশ অতীন ঘোষের
এমনকী এই ঘোরতোর অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। রীতিমতো উদ্বেগের সুরে তিনি বলেন, “ওই বালকের যাবতীয় মেডিকেল যাবতীয় রিপোর্ট আমরা জোগাড় করে স্বাস্থ্য ভবনে পাঠাচ্ছি। বারবার করে আমরা মানুষকে সচেতন করছি জ্বর হলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য। ওই বালকের বাড়ির সামনেও স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে। তারপরেও জ্বর নিয়েই ওই বালককে রেখে দেওয়া হয়েছিল। দেরি করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
স্বল্প বৃষ্টিতে বাড়ছে উদ্বেগ
যদিও পতঙ্গবিদ ডক্টর দেবাশীষ বিশ্বাসের মত, অতিবৃষ্টিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ কম থাকে। কিন্তু, অল্প বৃষ্টিতে জমা জলের পরিমাণ বাড়ে। সেখানেই জন্ম নেয় মশার লার্ভা। এদিকে হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গে প্রায় ৪৭ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। জুনের পর জুলাইয়েও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। বৃষ্টি হলেও তা হচ্ছে বিক্ষিপ্ত পরিমাণে। এদিকে ২০২০ এবং ২০২১ সালে বৃষ্টি প্রচুর হওয়ায় ডেঙ্গু আক্রন্তের সংখ্যা কম ছিল বলে দাবি করেছেন দেবাশীষ বিশ্বাস। কিন্তু, বর্তমানে কম বৃষ্টি এবং বিক্ষিপ্ত আকারে হওয়ায় বিভিন্ন ছোট ছোট কন্টেনারে জল জমছে এবং সেখানে ডেঙ্গুবাহী মশার লার্ভার জন্ম হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে কালীঘাটে জমা জল নিয়ে কিছুদিন আগেই সরব হয়েছিলেন ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি প্রবীর মুখোপাধ্যায়। স্কাইওয়াকের কাজ চলার জন্য জল জমে যাচ্ছে বলে পুরসভার শেষ দুটি মাসিক অধিবেশনে সরব হয়েছিলেন তিনি। যে কারণে এলাকার একাধিক বাড়ির ভিতর জল ঢুকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এমনকী জল সঠিকভাবে নিষ্কাশন হচ্ছে না বলেও তাঁকে অভিযোগ করতে দেখা যায়। পাশাপাশি এলাকার বাড়িগুলির একাংশ বেআইনিভাবে বাড়তি নির্মাণ করছে। যে কারণে এলাকার নিকাশের সমস্যা হচ্ছে এবং জঞ্জাল সঠিক রূপে সাফাই হচ্ছে না বলেও সরব হয়েছিলেন প্রবীর মুখোপাধ্যায়। এবার ডেঙ্গির কারণে কিশোরের মৃত্যুতে যে স্থানীয় প্রশাসনের নতুন করে অস্বস্তি বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।