কলকাতা: তেমন ভারী বৃষ্টি না হলে বর্ষার মরসুম শুরু হয়েছে বাংলায়। দক্ষিণে হালকা বৃষ্টির দেখা মিলছে। তবে উত্তরবঙ্গ কার্যত ভেসেছে প্রবল বৃষ্টিতে। আর এই মরশুমে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ। জেলায় জেলায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই মরশুমে কোভিডের পাশাপাশি ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তও দেখা যাবে। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। আর এবার মশাবাহিত এই রোগ নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। শুক্রবারই নবান্নের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাতে কোথাও জমা জল না থাকে, তার জন্য জেলায় জেলায় নজরদারি চালানো হবে। ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের অধীনে ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সন’ হিসেবে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েচে প্রশাসনের তরফে। পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকার কোথাও জল জমা থাকলে, তা দ্রুত বের করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু এলাকায় ঘুরলেই হবে না। ভিলেজ রিসোর্স পার্সনদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে জমা জল আছে কি না, তা দেখতে হবে। জল জমে থাকলে তার রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ সহ কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সেই জেলাগুলিকেও বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। স্বাস্থ্য দফতরকে ডেঙ্গি প্রতিরোধক কীটনাশক ব্যবহারের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্য সচিব এ দিন ডেঙ্গি নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকে একাধিক সরকারি দফতরের সচিব স্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ডেঙ্গি নিয়ে দফতরগুলিকে বিশেষভাবে নজরদারি করার কথা বলা হয় এ দিনের বৈঠকে।
সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর একটি কমিটি তৈরি করেছে। রোগীর মৃত্যু ডেঙ্গিতে কি না, তা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে। রাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও সেই কমিটিতে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডেঙ্গি-মৃত্যু নিয়ে রাজ্যে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে আগে। মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি কি না, আদৌ সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক সময়। এবার দায়িত্ব স্বাস্থ্য ভবনের হাতে চলে চলে গেল সেই দায়িত্ব। পরিসংখ্যান বলছে, শুধু ভারতেই প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন, যা গোটা বিশ্বের ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রায় এক তৃতীয়াংশ।