কলকাতা: হাওয়া ভাল নয়! রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে এই পর্যবেক্ষণের কথাই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরা। এ বছর শহর থেকেও এডিস ইজিপ্টাইয়ের হানায় বেশি কাবু গ্রাম বাংলা। আর সেখানেই উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাব্যক্তিরা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, গত জুলাইয়ে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬২৬। এ বছর তা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ অতিক্রম করেছে। শুধু তাই নয়। গড়ে মোট আক্রান্তের ৬৫ শতাংশই গ্রাম বাংলার। শহর কলকাতায় গত শনিবারই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা বছর দশেকের পল্লবী দে-র। গত সাত দিনে ডেঙ্গি আক্রান্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হঠাৎ করেই এই বছর রাজ্যের ডেঙ্গির এত বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন-ফ্যাক্টরও! কিন্তু কেন? পঞ্চায়েত সদস্য, গ্রাম বাংলার প্রতিনিধিরা নির্বাচনের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। স্বাস্থ্য কর্তারা বলছেন, মোট আক্রান্তের নিরিখে গ্রাম বাংলায় ৬৫ শতাংশ আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। গ্রাম বাংলার অনেক নতুন নতুন জায়গায় হানা দিয়েছে এডিস ইজিপ্টি। রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের তরফে বছরভর নজরদারির কথা বলা হয়। কিন্তু কেন বছরভর নজরদারিতে এই পরিস্থিতি আটকানো গেল না?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোট এবছর জুলাইতে হয়েছে। ফলে মশার লার্ভা নিধনের কাজ ব্যাহত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বোর্ডও গঠন হয়নি। গ্রাম বাংলায় এই কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা হচ্ছে। জন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছে, তথ্য গোপনও করা হয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। কোথায় কোথায় প্রকোপ বেশি, আদৌ কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছে কি না, সে সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য সচেতকদের মতে, মৃত্যুর সংখ্যা, আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত প্রকাশ্যে আনতে হবে। তাহলেই নিজ নিজ এলাকা সম্পর্কে সচেতন হবেন সাধারণ মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “বর্ষা এলে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া বাড়ে। আমাদেরই সচেতন হতে হবে। আমাদের টিম যাচ্ছে। যেখানে যেখানে লার্ভা মিলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এবার গ্রামে, পুরসভার, পুরনিগম পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রভাব বেশি।” উল্লেখ্য, এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে, রানাঘাট-১, রানাঘাট-২, হরিণঘাটা, কৃষ্ণনগর-১, আমডাঙা, বসিরহাট, হাওড়া পুরএলাকার একাধিক জায়গা। হুগলির রিষড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুর।