কলকাতা: রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘গদ্দার’ বলতে নারাজ ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব। তিনি বলেন, “আমি মনে ক রি না আমাকে মঞ্চে উঠে গদ্দার বলতে হবে’। প্রচারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু প্রসঙ্গে দেব বলেন, “ওই মানুষটি আমাকে ২০১৪ , ২০১৯ এ এলাকা ঘুরিয়েছিল । আজ যেমন হিরণকে নিয়ে ঘুরছেন। আমার নির্বাচন ফান্ড করেছে । আমি আজ লোকটাকে দেখে চিনতেই পারবো না এটা হয় না।”
২০১৯ সালের এই মেদিনীপুরের মাটির প্রেক্ষাপটই ছিল আলাদা। বিজেপির ‘গড়’ ভাঙতে মেদিনীপুরে জেলা পর্যবেক্ষক হিসাবে প্রথমে দায়িত্ব পেয়েছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর ওপরেই ভরসা রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালে প্রার্থী হয়েছিলেন দেব। তাঁকে নিয়ে মাটি চষে বেরিয়েছিলেন শুভেন্দু। এবার ২০২৪! শুভেন্দু এবারও মেদিনীপুরের রাস্তায় ঘুরেছেন। তবে পাশে ছিলেন হিরণ। আর সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই দেব হয়ে পড়েন নস্টালজিক। দেব বলেন, “আমি এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না, যে আমাকে মঞ্চে উঠে গদ্দার বলতে হবে। আমি এই রাজনীতিতেও বিশ্বাস করি না, যে আমার বিরোধী প্রার্থী হিসাবে যিনি দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের কুরীচিকর ভাষায় আক্রমণ করতে হবে। আমি মনে করি, যদি তুমি কাজ করে থাকো, তাহলে কাউকে আক্রমণ করতে লাগে না।”
একুশের সময় থেকে গোটা বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটই বদলে গিয়েছে। মমতা মন্ত্রিসভার অন্যতম মুখ শুভেন্দু অধিকারী একুশের নির্বাচনের আগেই বিজেপিতে যোগ দেন। বদলে যায় পরিস্থিতি। মেদিনীপুরের মাটির রঙও বদলায়। লোকসভা নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিক বার নাম না করে শুভেন্দুকে ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। পাল্টা শুভেন্দুকেও আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই রাজনীতিতে যে দেব একেবারেই বিশ্বাসী নন, তা স্পষ্ট বললেন তিনি। এর আগে দেবের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তখন দেব সম্পর্কে বলা শুভেন্দু অধিকারীর একটি মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায়। সেখানে কিন্তু দেবে-র বলা এই ‘তত্ত্বে’র একেবারে উল্টো মেরুতে অবস্থান করেছিলেন শুভেন্দু।
ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সংসদের ভিতরের একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন দেব। সঙ্গে লিখেছেন, ‘আর কয়েক ঘণ্টা…’। সে সময়ে দেবের এমপিল্যাডের থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন চাওয়া সংক্রান্ত একটি ভাইরাল অডিয়ো প্রসঙ্গে শুভেন্দু কিন্তু আক্রমণাত্মকই ছিলেন। শুভেন্দু বলেছিলেন, “দেব যে এজেন্ট দিয়ে কমিশন তোলেন, এটা ঘাটালের সবাই জানেন। দেবের এমপিল্যাডের কাজ নিতে গেলে, ৩০ শতাংশ কি না আমি জানি না, তবে কাটমানি দিতে হয়। এটা শুধু দেবের নয়, সব তৃণমূল সাংসদের।”
শুভেন্দু এটাও বলেছিলেন, “এনামুলের টাকায় দেব যে সিনেমা করেছেন, এটা তো প্রমাণিত সত্য। দেব একবার নিজাম প্যালেসে গিয়েছেন।” কিন্তু এসবের পরেও দেব শুভেন্দু প্রসঙ্গে রাজনৈতিক সৌজন্যই বজায় রেখেছেন।