কলকাতা: বাংলার নির্বাচনকে চিনের সঙ্গে তুলনা দিলীপ ঘোষের। “বাংলার অবস্থা চিনের মতো হয়ে যাবে। এক পার্টি গণতন্ত্র হয়ে যাবে বাংলায়। বাকিরা কেউ নির্বাচনে লড়তে পারবে না।” উপনির্বাচনে ৪ গোল খেতে মত বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
বুধবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে আসেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে তাঁকে উপনির্বাচনের হার নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উপনির্বাচনের হারের ব্যাখ্যা দেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময় আলাদা কূটনীতি কাজ করে, নির্বাচনের পর স্বাভাবিক রাজনীতি হয়। আমরা ২০২১-এ জেতার পরে তিনটে বাই ইলেকশনে হেরেছিলাম। কিন্তু জেনারেল ইলেকশনে জিতেছি।”
তাঁর সংযোজন, “কর্মীরা পার্টির আদর্শের জন্য কাজ করে। বাই ইলেকশনটা কোনও সিধান্তিক ব্যাপার নয়, এটা ব্যতিক্রম। সব জায়গায় তাই হয়েছে। কে কবে বাই ইলেকশন জিতেছে। জিততেই দেবে না কাউকে। নির্বাচনই করতে দেওয়া হচ্ছে না, প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্যান্ডিডেটকে ভোটটা পর্যন্ত দিতে দেওয়া হচ্ছে না। বাধা দেওয়া হয়েছে।” বাংলার উপনির্বাচনকে চিনের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
উপনির্বাচনে (By-Election) ৪-০ করে বিজেপিকে (BJP) ধরাশায়ী করেছে তৃণমূল (TMC)। তিন কেন্দ্রে আবার বিজেপির জামানত জব্দ হয়েছে। এদিকে, উপনির্বাচনের পর বিজেপিতে তরজার সুর আরও চড়ছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলত্যাগ নিয়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। নিশানা করেছেন ভোটের আগে দলে আসা নেতাদের। এর জবাব দেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়। দিলীপ যাঁদের নিশানা করেছেন, তাঁদের কারা দলে এনেছেন, এ প্রশ্ন তোলেন তথাগত।
চার বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভরাডুবির পর তিনি আরও আক্রমণাত্মক। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক বার্তা দিয়েছেন তথাগত। উপনির্বাচনে শোচনীয় ফলের জন্য তিনি রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন। বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে এ জন্য দায়ী করা যাবে না। তথাগতকে ফেসবুকে জবাব দিয়েছেন গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, ভোট পরিচালনার দায়িত্ব অমিত শাহ নিজের হাতে নিয়েছিলেন। রাজ্য নেতাদের হাতে ক্ষমতা ছিল না।
তথাগতর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপে দল। একদিনে দু’বার পোষ্ট করেছেন তথাগত। কখন দিলীপ ঘোষ, কখনও মোদী, অমিতশাকে নিয়ে। শেষে আরএসএস নেতা এবং বিজেপি র বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেন গুপ্ত মুখ খোলেন। জানা গিয়েছে, তথাগতর সব পোষ্ট দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। আলাদা করে আরএসএস সদর দফতরেও পাঠানো হয়েছে।
যদিও তাঁর এই সমালোচনামূলক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন টুইট-ফেসবুকেও সীমাবদ্ধ বিষয় নিয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না। উল্লেখ্য, ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে ছিলেন তথাগত রায়। উপনির্বাচনে দলের হারের পর তাঁর এহেন দুই পোস্ট নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: Municipality Election: উপনির্বাচন ৪-০ করেই পুরভোট চাইল রাজ্য, কমিশনকে চিঠি পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের