কলকাতা: কমিউনিস্টরা কাঁকড়ার মতো। কাউকেই ওপরে উঠতে দেয়নি। জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। বুদ্ধবাবুকে পদ্মশ্রী নিতে দিল না। এবার প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বৃহস্পতিবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণের পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তাঁকে স্বাভাবিকভাবেই বুদ্ধবাবুর পদ্ম-প্রত্যাখ্যান নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। তখনই দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওঁ শুধু রাজনীতিক নন । সাহিত্যিকও বটে। শুরুতেই দল বলে দিল, নেওয়া যাবে না। ওঁ দলীয় অনুশাসন মেনে চলেন। তাই ওঁ নিতে অস্বীকার করলেন।” এক্ষেত্রে তিনি সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়েরও প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, “সোমনাথবাবুও একই ঘটনার স্বীকার। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে বাড়িতে দলের নেতাদের ঢুকতে দেননি। এটা ভুলে যাবেন না।”
পদ্ম পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে হইচই ফেলে দিয়েছেন শয্যাশায়ী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। জাতীয় রাজনীতি এখন তোলপাড়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এখনও অসুস্থ, অশক্ত। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোটও দিতে যাননি তিনি। জাতীয় রাজনীতিতে তিনিই এখন ঝড় বইয়ে দিলেন। উত্তেজনার উপলক্ষ্য পদ্ম সম্মান।
২৫ জানুয়ারি পদ্ম প্রাপকদের তালিকায় নাম প্রকাশ হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। বাবরি ধ্বংসের পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য লিখেছিলেন তাঁর বই ‘দুঃসময়’। বিজেপির ঘোর সমালোচক তিনি। সেই বিজেপি সরকার তাঁকে পদ্ম সম্মান দিচ্ছে। এই ঘোষণায় জাতীয় রাজনীতিতে হইচই পড়ে যায়। তবে ২৫ জানুয়ারি রাতেই বুদ্ধবাবু বিবৃতি দিয়ে জানান, “পদ্ম সম্মান নিয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে এই নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। পদ্মভূষণ দেওয়া হলে, তা প্রত্যাখ্যান করছি।”
বিমান বসু তারপরই সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, “এই প্রত্যাখ্যান করার জন্য আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই।” প্রসঙ্গত, অতীতে জ্যোতি বসুকেও ভারত রত্ন সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব হয়। কিন্তু তা শোনা মাত্রই তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম তালিক পর্যন্ত পৌঁছাল কীভাবে, তার সম্মতি না নিয়েই কি তালিকা প্রকাশ? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
কেন্দ্রীয় সূত্র দাবি করেছে, ২৫ জানুয়ারি বিকালে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক ফোন করেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়। মীরা ভট্টাচার্য নেতিবাচক কিছু বলেননি। এরপর সেই আধিকারিক অভিনন্দন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। দিলীপ ঘোষ বুধবারই এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “কমিউনিস্টরা চিরদিন দেশের সংস্কৃতিকে অপমান করেছেন।” সিপিএমের দাবি, রাষ্ট্রের কাছ থেকে এই ধরনের সম্মান প্রত্যাখ্যান করাই তাদের রীতি।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari on Shantanu Thakur: ‘শান্তনু আমার ভাই, সহকর্মী…কোনও কথা নয়’
আরও পড়ুন: Weather Updates: ভরা মাঘেও মুখভার আকাশের, সরস্বতী পুজোয় ঝাঁপিয়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা…কী বলছে হাওয়া অফিস?