কলকাতা : আজ থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালিন অধিবেশন। প্রথম দিনেই কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল (Farm Laws Repeal Bill) পেশ করা হবে কেন্দ্রের তরফে। আর তার আগেই বিরোধীদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে কংগ্রেস। কিন্তু সেই বৈঠকে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস- তৃণমূলের সেই দ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করলেন বিজেপি সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার সকালেই দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে বিরোধীদের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিরোধীদের বৈঠক কে ডাকবে, তা নিয়েই ঝগড়া। কংগ্রেস ডাকবে, নাকি তৃণমূল ডাকবে, না অন্য দল ডাকবে?’ তবে তিনি জানান এ সবে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয় বিজেপি। দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘কে কংগ্রেস, কে তৃণমূল, কে নির্মূল! আমাদের মাথা ব্যাথা নেই’। তিনি জানান, সংসদের কাজ যাতে সুষ্ঠভাবে হয় সেটাই একমাত্র উদ্দেশ্য শাসক দলের।
তৃণমূলের নাম না করে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষের দাবি, কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে, কখনও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে চলছে তারা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, যখন বিজেপি বিরোধী দল ছিল, তখন এই দলগুলোই একবার বিজেপির সঙ্গে, একবার বিজেপিকে বাদ দিয়ে চলত। বিরোধী দলগুলিকে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠককে ‘ড্রামা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এইসব ড্রামা অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে।’ তাঁর কথায়, ‘এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিরোধীদের বৈঠক কে ডাকবে? তা নিয়েই ঝগড়া।’ বিরোধীদের মধ্যে কে নেতা হবে? সে দ্বন্দ্বের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘ওরা ঠিক করে নিক নেতা কে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতা হতে চাইছেন, সোনিয়া গান্ধীর দিন চলে গিয়েছে। এইসব করতে করতে এই সিজন পার হয়ে যাবে।’
তবে বিরোধীদের এই বৈঠককে গুরুত্ব দিতে নারাজ তিনি। সংসদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। দিলীপ ঘোষ জানান, সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে আর সেখানে সবথেকে বড় বিষয় হল কৃষি বিল প্রত্যাহার করা। এ ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিল আছে, সেগুলোও পাস হবে। তিনি জানান, কোভিড মহামারির জন্য আটকে থাকা অনেক কাজও সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেবে কেন্দ্র। শীতকালীন অধিবেশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চায়। দেশের স্বার্থে গঠনমূলক হোক বিরোধীরা। যদি বিরোধিতা করার মতো কোনও বিষয় থাকে, নিশ্চয়ই বিরোধিতা করা উচিৎ। তবেই তো সফল হবে গণতন্ত্র। আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা চাই রাষ্ট্রীয় স্বার্থে কাজ হোক, আমরা সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, সোমবার কংগ্রেসের ডাকে বিরোধীদের যে বৈঠক সেখানে তৃণমূল হাজির থাকছে না বলেই সূত্রের খবর। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বিরোধী দলগুলির বৈঠকে তৃণমূল উপস্থিত থাকবে না সোমবার। তবে জানা যাচ্ছে, এই বিষয় নিয়ে তৎপর হয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছেন। এমনকি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলারও নির্দেশ দিয়েছেন সোনিয়া। তবে তৃণমূলের তরফ থেকে বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ারই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের সমস্ত বিরোধীদলগুলির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যই মূলত সোমবার বিরোধী দলগুলির বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। সেখানে বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে।
আরও পড়ুন: অধিবেশনে কেন্দ্রের ‘তুরুপের তাস’ কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল, কী কী ইস্যুকে হাতিয়ার বানাচ্ছে বিরোধীরা?