কলকাতা: কয়েকদিন আগে সিবিআই (CBI) তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল-সিবিআই সেটিং তত্ত্ব নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি। তবে সোমবার সিবিআই-এর কাজের প্রসঙ্গে কিছুটা সুর নরম হতে শোনা গেল বিজেপি নেতার গলায়। সকাল-সকাল প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘সিবিআই সত্য উদঘাটনের জন্য’। একই সঙ্গে সিআইডি-র ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি।
সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের মত
গত মার্চ মাসে পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিল তপন কান্দুর হত্যা মামলায় ঝাড়গ্রাম থেকে শার্প শ্যুটারকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই প্রসঙ্গে তপন কান্দুর স্ত্রী সিবিআই-এর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সিবিআই সঠিক তদন্ত করছে।’ অপরদিকে, সেই একই সময়ে পানিহাটিতে তৃণমূল কাউন্সিল অনুপম দত্তও খুন হন। সেই ঘটনার তদন্ত ভার হাতে নেয় সিআইডি। কিন্তু তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, খুনিরা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মতামত দিতে গিয়ে দিলীপ বলেন, ‘সিআইডি তদন্ত হল সত্যকে চাপা দেওয়ার জন্য। আর সিবিআই সত্য উদঘাটনের জন্য। সেই কারণে সাধারণ মানুষ এখন সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন।’ বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘তৃণমূলের যে কর্মী নেতারা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিজনও চাইছেন যে সিবিআই তদন্ত হোক। এই জন্যই তাঁরা কোর্টে গিয়েছেন। আসলে পরিষ্কার হয়ে গেছে আবার সমস্ত কিছু ঘেঁটে দেওয়ার জন্য সিআইডি-কে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেটা মাঝখানে করা হয়েছিল সারদা মামলায়।’
বস্তুত, নিয়োগ কেলেঙ্কারি, গরুপাচার, কয়লাপাচার থেকে শুরু করে নতুন সংযোজন চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে লাগাতার তল্লাশি চালাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকরা। গ্রেফতার করা হচ্ছে একের পর এক তাবড় ব্যক্তিকে। প্রতিদিন নিত্য নতুন তথ্য সামনে আসছে। সোমাবার সেই তদন্তেরই প্রতিক্রিয়া দেন দিলীপ।
কী বলেন বিজেপি নেতা?
‘সিবিআই সমস্ত কিছুরই তদন্ত করছিল। কিন্তু এতদিন সেই তদন্ত ঠিক মতো এগোচ্ছিল না বলে আমরাও বলেছিলাম। সাধারণ মানুষও চিন্তা করছিল কেন তদন্ত হচ্ছে না। ধীরে-ধীরে তাঁদের লোক সংখ্যা কম আছে। এত বড় কেস, এত বিস্তৃত, তাই তদন্তের গতি ধীরে এগোচ্ছিল। এবার সব সত্য সামনে আসবে।’
যদিও, এর আগে উল্টো সুর শোনা গিয়েছিল দিলীপ ঘোষের গলায়। সিবিআই তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি।
কী প্রতিক্রিয়া ছিল তাঁর?
দিলীপ বলেছিলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে এখানে সিবিআই তদন্ত চলছে। কিন্তু, কেউ ধরা পড়ছিল না। কোনও এফেক্ট পড়ছিল না, কোনও ডকুমেন্ট আসছিল না! এর কারণ কী? সর্ষের মধ্যে ভূত ছিল। খবর আছে, এটা জানার পরেই কিছু অফিসারকে পরিবর্তনও করা হয়েছে। যথারীতি যা হয় আর কী, সবাই বিক্রি হয়। তার দাম থাকে। কেউ লক্ষে হয়, কেউ কোটিতে। সে ভাবে বিক্রি হচ্ছিল। এটা সরকার বুঝতে পেরেছে। আমি যতদূর শুনেছি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিশেষ প্রয়াসে শেষে ইডি এসেছে। তারপর কাজ শুরু হয়েছে।’
এরপর আজ দিলীপের এই মন্তব্যে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন তাহলে কি সিবিআইএর কাজে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন তিনি?