কলকাতা : অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। এসএসসি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কড়া পদক্ষেপ না করে, তার আবেদন জানিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। কিন্তু, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর আর্জি খারিজ করে দিল। ফলে প্রয়োজনে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই। তবে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর যে সুপারিশ করেছে, তা মানতে রাজ্য সরকার বাধ্য নয় বলে জানাল দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ বুধবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেন। প্রয়োজনে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলেও জানান। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আজ সওয়াল করেন পার্থর দুই আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিন্দ্য মিত্র।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চকে বলেন, তাঁর মক্কেল সিবিআই-কে সবরকম সাহায্য করবেন। কিন্তু, তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে যেন কড়া পদক্ষেপ না করে, তা নিয়ে নির্দেশ দিক আদালত।
পার্থর আরেক আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র সিঙ্গল বেঞ্চের সুপারিশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতি কোনও মন্ত্রীকে সরানোর জন্য সুপারিশ করতে পারেন কি না, এই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
পার্থর আইনজীবীদের সওয়াল শোনার পর রায়দান সাময়িক স্থগিত রেখেছিলেন দুই বিচারপতি। তারপর রায়দান দিতে গিয়ে জানিয়ে দিলেন, কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া হবে না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। এসএসসি নিয়োগ মামলায় তদন্ত নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে আগেও সমর্থন করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চ যে সুপারিশ করেছে, রাজ্য সরকার তা মানতে বাধ্য নয় বলে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল।
বুধবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের পর নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে গিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেদিন তাঁকে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আগামী সপ্তাহে ফের তাঁকে তলব করেছে সিবিআই। এদিকে, গতকালই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। কিন্তু, তাঁর আবেদনের শুনানির সময় নিয়ে শীর্ষ আদালত এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আইনজীবীরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টে পার্থর আবেদনের শুনানি হলে, শীর্ষ আদালত কী নির্দেশ দেয়, সেটা দেখার। সেদিকেই তাকিয়ে সব পক্ষ।