কলকাতা: স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন আজ তৃতীয় দিনে পড়েছে। দু রাত রাস্তাতেই কাটিয়েছেন তাঁরা। তৃতীয় দিনে নবান্নের তরফ থেকে ফের চিঠি দিয়ে বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে বসতে চান। তবে আন্দোলনকারীদের দেওয়া সব শর্ত মেনে নেওয়া হয়নি নবান্নের তরফে।
মমতা বলছেন…
“পৌনে ৫টা থেকে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি। আমার ভাইবোনেদের শুভবুদ্ধি উদয় হবে, তাঁরা আসবেন, ভেবেছিলাম। আসতে বলে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম প্রথমে। ওঁরা আসবেন বলেছিলেন। আমার সঙ্গে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি ও প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ছিলেন।”
“একবার ওদের নিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং করেছিলাম। তখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছিল না। সিবিআই-এর হাতে কেস ছিল না। আমরা রেকর্ডিং-এর কথা বলেছিলাম, স্বচ্ছতার জন্য। আমরা তিনটি ভিডিয়ো ক্যামেরা রেখেছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে সেটা প্রকাশ করতে পারতাম। সুপ্রিম কোর্ট যা পারে, আমরা তা পারি না। শীর্ষ আদালতে যখন মামলা বিচারাধীন, মামলাটা যখন সিবিআই দেখছে, সেখানে লাইভ স্ট্রিমিং করা যায় না।”
Breakthroughs can only happen through dialogue. GoWB has taken several steps towards collaborative discussion.
Hon’ble CM @MamataOfficial is waiting at Nabanna for a holistic discussion on safety and security of doctors. But, it seems that the Junior doctors are not prioritising… pic.twitter.com/azQLo22YxI
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) September 12, 2024
বিকেল ৫টায় আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল নবান্নের তরফে। কিছুটা দেরি হলেও নবান্নে পৌঁছে যান ডাক্তাররা। কিন্তু নিজেদের শর্তে অনড় চিকিৎসকেরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ১৪ তলায় ফিরে যান মমতা। এরপর আবার সভাঘরে যান তিনি।
অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া কোনও আলোচনা হবে না।
ডিজি রাজীব কুমার বলেন, “কোনও ফর্মাল মিটিং বা আলোচনায় লাইভ স্ট্রিমিং করা যায় না। যে বিষয়টা সাধারণ মানুষকে জানানো প্রয়োজন, সেটা লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়। এই ক্ষেত্রে লাইভ স্ট্রিমিং করার কোনও কারণ নেই।”
মুখ্যসচিবও বলেন, “যেটা মানুষকে সরকার জানাতে চায়, সেইটুকুই লাইভ স্টিমিং করা হয়। আলোচনার লাইভ সম্প্রচার সম্ভব নয়।” ডিজিকে পাশে নিয়ে মুখ্যসচিব বুঝিয়ে দিলেন বৈঠক মানুষকে জানাতে সরকার লাইভ করবে না। এটা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী আলোচনার জন্য সভাঘরে উপস্থিত রয়েছেন প্রায় দেড় ঘন্টা। এটার একটা লিমিট রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যসচিব।
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও ডিজি রাজীব কুমার। মনোজ পন্থ বলেন, “আমরা দুপুরেই মেইল করেছিলাম। তারপর জুনিয়র ডাক্তাররা এসেছে। ওদের ইস্যু হল লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে। আমরা বলেছিলাম ভিডিয়ো রেকর্ড করব, যাতে আমরা ওই ভিডিয়ো রেখে দিতে পারি। আমরা ওদের বলেছি, আলোচনায় অংশ নিন। মুখ্যমন্ত্রী ওঁদের জন্য অপেক্ষা করছেন।”
ডিজি বলছেন, কোনও ফর্মাল বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিং হয় না। এর কোনও যুক্তি নেই।
এখনও নিজেদের দাবিতে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুখ্যসচিব কথা বলে চলে যাওয়ার পর বেরিয়ে আসেন ডিজি রাজীব কুমার। তাঁরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। টানটান পরিস্থিতি নবান্নে।
নবান্ন সভাঘরে প্রবেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। অন্যদিকে, লাইভ স্ট্রিমিং-এর দাবি অনড় চিকিৎসকেরা। চলছে আলোচনা। এরই মধ্যে বাইরে বেরিয়ে এলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি নিজে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন।
পুরো বৈঠক লাইভ স্ট্রিমিং করার দাবি জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু সেই দাবি মানছে না রাজ্য। ৩০ জনকে প্রবেশ করতে দিলেও এই দাবি না মানায় ফের আলোচনা শুরু করলেন চিকিৎসকেরা। কারণ তাঁরা কোনও আপোষ করতে রাজি নন। তাই নবান্ন সভাঘরের বাইরেই জিবি চলছে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের। তাঁরা চান, যে বিপুল সংখ্যক মানুষ তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই যেন আলোচনায় চোখ রাখতে পারেন।
আন্দোলনকারীদের শর্ত মানল নবান্ন। ৩০ জনই ঢুকলেন ভিতরে। উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান দিতে দিতে এদিন বাস থেকে নেমে নবান্ন সভাঘরে প্রবেশ করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নবান্নের সামনে এই স্লোগান কার্যত নজিরবিহীন। তবে লাইভ স্ট্রিমিং হবে কি না, তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি কার্যত মেনে নিল নবান্ন। সূত্রের খবর, ৩০ জন প্রতিনিধিকেই নবান্ন সভাঘরে প্রবেশ করা হবে। সেই মতো সভাঘর প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে লাইভ স্ট্রিমিং হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রী ওপরেই।
নবান্নের একটি বড় সভাঘর প্রস্তুত করা হচ্ছে বৈঠকের জন্য। ইতিমধ্যেই বাসে উঠে পড়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। নবান্ন সূত্রে খবর, যে সভাঘরে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সেখানে ৩০ জনও বসতে পারবেন। তবে ৩০ জনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নবান্ন বলছে, বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করা হবে না, ভিডিয়ো রেকর্ড করা হবে। আন্দোলনকারীরা লাইভ স্ট্রিমিং-এর দাবিতে অনড়। কোনও আপোষ নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বলছেন, “লাইভ স্ট্রিমিং-এর পথ মুখ্যমন্ত্রীরই দেখানো। তাঁর প্রশাসনিক বৈঠক যদি লাইভ স্ট্রিমিং হতে পারে, তাহলে চিকিৎসকদের বৈঠক নয় কেন?”
নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল ১৫ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, ৩০ জন প্রতিনিধিকে নিয়েই যাবেন তাঁরা। প্রবেশ করতে না দেওয়া হলে, কী করা হবে, তা নবান্নে পৌঁছে ঠিক করা হবে।
তাঁরা নিজেরাই বাসের ব্যবস্থা করেছেন। তাতে চেপেই ৩০ জন প্রতিনিধি যাচ্ছেন। বিকেল ৪টে ৪৫ মিনিটের মধ্যে নবান্নে পৌঁছে যাবেন তাঁরা।