কলকাতা : ২০০২ সালের ৪ মার্চ দমদমে জোড়া খুনে অভিযোগ উঠেছিল দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ওই বছরের ১১ এপ্রিল গ্রেফতার হন তৎকালীন কাশীপুর বেলগাছিয়া জোনাল কমিটির সদস্য দুলাল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশেই গ্রেফতার হয়েছিলেন ওই দাপুটে সিপিআইএম নেতা। ২০০৩ সালের ২৯ অগস্ট সাজা ঘোষণা হয়। কারাদণ্ড হয় দুলালের। তারপরে তাঁর সদস্যপদ কেড়ে নেয় সিপিএম। বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। ১২ বছর জেল জীবন কাটিয়ে ২০১৪ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে আসেন দুলাল।
সম্প্রতি দুলালের দলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। এমনকী দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও সিপিএম সূত্রে খবর। তবে দলের আর এক অংশ বলছে, ফেরার বিষয়ে আলোচনা চলছে, তবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আলোচনা হয়নি। দুলালের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে নাকি পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির ওপরে।
পার্টিতে ফিরতে চেয়ে ২০২২ সালে সিপিএমের রাজ্য কমিটিকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন দুলাল। দাপুটে দুলাল বলছেন, রোখা মেজাজ, ঠোকা কপাল হতে পারে। কিন্তু জনতার চাহিদা পূরণ করতে গেলে দল যদি মনে করে আমাদের মতো কর্মীকে পার্টির প্রত্যক্ষভাবে প্রয়োজন আছে, তাহলে আমি গর্বিত বোধ করব। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেননি কখনও।
দুলালের ফেরা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “যাঁরা একটু দূরে চলে গিয়েছিলেন, নড়ে গিয়েছিলেন, সরে গিয়েছিলেন, তাঁদের দিকে আমরা দু’হাত বাড়িয়ে সঙ্গে নিচ্ছি। যাঁরা দূরে যাননি। তাঁরা তো আছেনই।”
তবে পার্টি থেকে বহিষ্কৃত থাকলেও ইদানিং এলাকার বেশ কিছু কর্মসূচিতে দুলালকে দেখা গিয়েছে।
দুলালের ভাই বাবিন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দলে আছেন। ২০১৭ সালে দলের জোনাল কমিটি ভেঙে এরিয়া কমিটির তৈরির পর্বে একটি প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বাবিনকে সামনে আনার ফলে এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছিল, যা সামাল দিয়েছিলেন আর এক প্রয়াত নেতা রাজদেও গোয়ালা। ঘটনাচক্রে, দুলালকে বুদ্ধদেববাবুর পুলিশ গ্রেফতার করতে এলে রাস্তা আটকেছিলেন এই রাজদেও গোয়ালাই।