AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

RG Kar Kolkata Derby: ‘…মেয়েটাকে ফিরিয়ে দে’, সৃষ্টিশীল স্লোগানে জমল ইস্ট-মোহনের ‘খেলা’

RG Kar Kolkata Derby: : প্রতিটি প্রতিবাদ, প্রতিটি বিক্ষোভই জন্ম দেয় নতুন নতুন স্লোগানের। বাংলাদেশেও ছাত্র আন্দোলন, সরকার বিরোধী আন্দোলন জন্ম দিয়েছিল বহু অনন্য স্লোগানের। আর স্লোগান তৈরিতে তো ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকদের জুড়ি মেলা ভার। রবিবার, খেলা ছিল না, ছিল প্রতিবাদ। আর সেখানেও দুর্দান্ত সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিলেন তাঁরা।

RG Kar Kolkata Derby: '...মেয়েটাকে ফিরিয়ে দে', সৃষ্টিশীল স্লোগানে জমল ইস্ট-মোহনের 'খেলা'
স্লোগানো স্লোগানে যুবভারতী চত্বর কাঁপাল ইস্ট-মোহনImage Credit: TV9 Bangla
| Updated on: Aug 18, 2024 | 8:33 PM
Share

কলকাতা: কলকাতা ডার্বি। ১০০ বছরের বেশি পুরোনো এই দ্বৈরথ। বাঙালি দুই ভাগ হয়ে যায় এই ফুটবল ম্যাচ নিয়ে। ফিফার বিচারেও ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগানের এই ম্যাচ এশিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবল দ্বৈরথ। এই ফুটবল ম্যাচে মাঠে যাওয়ার অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারা জানে, নিজ নিজ দল নিয়ে দুই দলের সমর্থকদের আবেগ ঠিক কতটা। এই আবেগ থেকেই মাঠে তৈরি হয় অনেক মজার মজার স্লোগানও। ‘যতবার ডার্বি, ততবার হারবি’, ‘লড়েছি অনেক যুদ্ধ, মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ/ জাকার্তা থেকে জম্মু,করেছি বাজিমাৎ/ দুচোখে ভরা স্বপ্ন,বুকেতে দাবানল/ লড়াইয়ের রূপকথা, ও আমার ইস্টবেঙ্গল’, ‘শীত-গ্রীষ্ম ভরসা, ব্যারেটোই ভরসা’, ‘মোহন”ভারতী তুললো স্লোগান, অপরাজেয় মোহনবাগান, ভারত জুড়ে উঠছে স্লোগান, শীর্ষে আমার মোহনবাগান’ – এমন কত স্লোগান তৈরি করেছেন দুই দলের সমর্থকরা। কিন্তু, রবিবারের (১৮ অগস্ট) ডার্বি এক নতুন ছবির জন্ম দিল।

এদিন যুবভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে হওয়ার কথা ছিল ডুরান্ট কাপের ফাইনাল। তবে, কলকাতা-সহ গোটা ভারত এমনকি বিদেশেও এখন মানুষ ক্ষুব্ধ। আরজি কর হাসপাতালে প্রশিক্ষণার্থী মহিলা চিকিৎসকের জঘন্য পরিণতি নিয়ে ফুঁসছে সবাই। প্রাথমিকভাবে মাঠে গ্যালারি থেকেও সেই প্রতিবাদে সামিল হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দুই দলের সমর্থকরা। তবে, ঝামেল হওয়ার আশঙ্কায় ঠিক একদিন আগে এই ম্যাচ বাতিল করা হয়। খেলা বাতিলের এই সিদ্ধান্ত যেন আরও খেপিয়ে দিয়েছিল দুই দলের সমর্থকদের। আর তাতেই এদিন এক অদ্ভূত ছবি দেখা গেল যুবভারতী চত্বরে। এদিন আর কেউ লাল-হলুদ নয়, সবুজ-মেরুন নয়, সব রঙ মিশে গেল প্রতিবাদের রঙে। আর প্রতিটি প্রতিবাদ, প্রতিটি বিক্ষোভই জন্ম দেয় নতুন নতুন স্লোগানের।

বাংলাদেশে জুলাই ও অগস্টের শুরুতে যে ছাত্র আন্দোলন, সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছিল, সেই আন্দোলনও জন্ম দিয়েছিল বহু অনন্য স্লোগানের। কেউ বলেছিলেন, ‘ভয় পেলে তুমি শেষ, ভয় না পেলেই বাংলাদেশ’, ‘বুকের ভিতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি রাজপথে’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ এর মতো সৃষ্টিশীল ও আগুনে স্লোগান। স্লোগান প্রিয় ইস্ট-মোহন সমর্থকদের যৌথ প্রতিবাদও ব্যতিক্রম হল না। এদিনও মাঠে জন্ম নিল নতুন নতুন স্লোগান।

ডার্বি হওয়ার কথা ছিল দুই ঘণ্টার, প্রতিবাদ চলল চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। ডার্বির আগের দিন থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই দলের সমর্থকরাই স্লোগান লেখা শুরু করেছিলেন, ‘ঘটি বাঙাল এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, ‘ঘটি-বাঙাল ভাই ভাই, আরজিকরের বিচার চাই।’ এদিন, যুবভারতী চত্বরে জড়ো হওয়া ইস্ট-মোহন জনতার নুখে এই স্লোগানগুলি তো ছিলই, তার সম্প্রসারও ঘটল। কেউ বললেন, ‘তুমি আমি একই স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, কেউ বললেন, চিংড়ি-ইলিশ এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর, কেউ ‘মাচা-ঘটি একই স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, কেউ বা ‘তুমিও তাই, আমিও তাই, আরজি করের বিচার চাই’, ‘ঘটি বাঙাল ভাই ভাই, আরজি করের বিচার চাই’, ‘দুই গ্যালারির একটা স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, ‘ঘটি বাঙাল দিয়েছে ডাক, তিলোত্তমা বিচার পাক’।

ডার্বি বাতিলের পর এদিন, কার্যত মাঠ দখলের ডাক দিয়েছিলেন দুই প্রধানের সমর্থকরা। কিন্তু, তাতেও বাধ সেধেছিল পুলিশ। এদিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুবভারতী চত্বরে প্রতিবাদ মিছিল করতে দেওয়া যাবে না। বিএনএসএস-এর ১৬৩ ধারা (আইপিসির ১৪৪ ধারা) অনুযায়ী, সেখানে জমায়েত করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু, তাতেও দমেননি ফুটবল প্রেমী, ন্যায়বিচার চাওয়া মানুষ। জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও করে পুলিশ। তাতে স্লোগান একটু বদলে, লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন সমর্থকরা আওয়াজ তুললেন, ‘লাঠি চার্জ করবি কর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, ‘লাঠির বাড়ি ভয় পেল, ডার্বি বাতিল করে দিল’।

এটা ছিল মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বি। তবে, এটাতেই প্রথম দুই দল পূর্ণ শক্তি নিয়ে নামছিল। সেই ডার্বি বাতিল করা নিয়ে কিন্তু এদিন এতটুকু হাহুতাশ ছিল না সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু, তাদের প্রতিবাদের কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা একেবারেই মেনে নিতে পারেনি তাঁরা। তাই স্লোগান উঠল ‘ডার্বি কাড়বি কেড়ে নে, মেয়েটাকে ফিরিয়ে দে’, ‘খেলার মাঠ বন্ধ তবে, খেলার বদলে বিচার হবে’, ‘যুবভারতীর বন্ধ গেট আরজি করের বিচার চায়’। এমনকি, তাদের ক্রোধ বর্ষিত হল সরাসরি প্রশাসনের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিও। তাঁকে স্বৈরাচারী বলেও দাগিয়ে দিল মাঠমুখী জনতা। চেনা স্লোগান, যতবার ডার্বি… একটু বদলে হল, ‘যতবার ডার্বি, স্বৈরাচারী হারবি।’ স্লোগান উঠল, ‘এক হয়েছে বাঙাল-ঘটি, ভয় পেয়েছে হাওয়াই চটি।’ এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে কেউ কেউ স্লোগান দিলেন, ‘ইস্ট-মোহনের দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’।

আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)