কলকাতা: শহরে আন্তর্জাতিক হাওয়ালা চক্রের সঙ্গে প্রভাবশালী যোগ রয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে ধৃতদের টানা জেরা করছে ইডি। ইতিমধ্যেই হাওয়ালা কাণ্ডে ধৃত ৬ জনকে ১৭ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে সিবিআই স্পেশাল আদালত। ইডি সূত্রে খবর, রবি ও সোমবার ছুটি থাকবে, শনিবারই আদালতে পেশ করা হবে ধৃতদের। ইডির তদন্তে উঠে এসেছে ধৃতদের পেছনে কোনও প্রভাবশালী ব্য়ক্তির যোগ রয়েছে। তবে সেই ব্যক্তি কে, তা জানার জন্য ধৃতদেরকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও ব্যক্তিত্বেরও যোগ রয়েছে কিনা, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের চার জায়গায় তল্লাশি শুরু করে ইডি। সুকুমার মৃধা নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর নাম উঠে আসে হাওয়ালা চক্রের নেপথ্যে। আসলে মাছ ব্যবসার আড়ালে বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে জড়িত তিনি। ইডি সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। রয়েছে বেআইনি পাচারের অভিযোগও। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে সুকুমার মৃধার আদি বাড়ি। কলকাতায় ব্যবসায়ীর আরও একটি বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সুকুমারের বাইপাস ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন অফিসে তল্লাশি চালান আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক হাওয়ালা চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকা। প্রণব অধিকারী নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও তল্লাশি চলছে। তাঁর বাড়িতে গিয়ে হানা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। কীভাবে কালো টাকা সাদা করা হত, তার খোঁজ চলছে।
এবারের বিষয়টি আরও একটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতদিন পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, হাওয়ালা চক্রে বিদেশ থেকে ভারতে টাকা আসত। এবার বাংলা থেকেই টাকা খাটানো হচ্ছে অন্যত্র। বাংলাদেশ সরকারের তরফে ভারত সরকারকে জানানো হয়। তারপরই ইডি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সকাল ৬টার সময়ে বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে রাজারহাট, দমদম ও উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চলে। সুকুমার মৃধার সঙ্গে কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ রয়েছে, সেই নামটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এক্ষেত্রেও কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ে কিনা, সেটাই দেখার।