কলকাতা: শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি, পুরনিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ইডি যখন তেড়েফুঁড়ে তদন্ত চালাচ্ছে, তখন নয়া বিড়ম্বনা শাসকদলের জন্য। ফ্ল্যাট দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের। আজ মঙ্গলবার তাঁকে তলব করেছে ইডি। তিনি কি হাজিরা দেবেন, নাকি এড়িয়ে যাবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা।
গড়িয়াহাটের একটি রিয়াল এস্টেট সংস্থার বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফ্ল্য়াট দেওয়ার নাম করে বহু ব্যাঙ্ক কর্মীর থেকে ২৪ কোটি টাকার প্রতারণা ওঠে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। ‘সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থার সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্মীদের চুক্তি হয়। ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে ৫০০ জনের কাছ থেকে টাকা নেয় ওই সংস্থা। এই সংস্থারই ডিরেক্টর হিসাবে ২ বছরেরও বেশি সময় ছিলেন নুসরত জাহান। প্রতারিতরা নুসরতের নাম করেই অভিযোগ জানান ইডির দফতরে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মঙ্গলে ডাক পড়েছে নুসরতের।
১. সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে তিনি কীভাবে যুক্ত?
২. সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন?
৩. কোন কোন বিষয় দেখতেন তিনি?
৪. ফ্ল্যাট তৈরির চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য তাঁর জানা ছিল?
ইতিমধ্যেই নসুরত-তলবকে কেন্দ্র করে রাজনীতির লড়াই শুরু। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় ইডির এই তলব প্রসঙ্গে বলেন, “প্রতারণার বিরুদ্ধে যে আইনের ধারা, সেই আইনের ধারায় সিআইডি তদন্ত করতে পারে। অপরাধের টাকার দুর্নীতি হলে ইডি তদন্ত করতে পারে। এগুলো কিছু না দেখেই ইডি সোজা সমন করে লোককে।”
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “তলব তো করছে। কিন্তু যাঁরা প্রতারিত, তাঁরা তো অবসরপ্রাপ্ত লোকজন। তাঁরা সারা জীবনের সঞ্চয় এদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ৫ লক্ষ, সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে যে আগাম নিয়েছে, সেগুলি ফেরত দিতে হবে। ইডি সে ব্যবস্থা করুক।”
নুসরতের আগে তলব করা হয় এই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর রাকেশ সিংকে। রাকেশের থেকে চুক্তি-সহ অন্যান্য তথ্য নিয়েই নুসরতের মুখোমুখি হতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে ও নথি জোগাড়ে সময় চেয়ে হাজিরা এড়িয়ে যান রাকেশ। এই সংস্থার আরেক ডিরেক্টর রূপলেখা মিত্রকেও বুধবার ডেকেছে ইডি। তিনিও জানিয়েছেন, নথি জোগাড়ে সময় চান। ফলে বুধবার আসছেন না। আজ মঙ্গলে ইডি দফতরে কি পা পড়বে নুসরতের, এখন সেটাই দেখার। সূত্র বলছে, ইডি দফতরে যেতে পারেন তিনি।