কলকাতা : ‘পুরস্কারের নাম বদলে গেলেই অমর্ত্য সেনের গরিমা কমে যায় না’। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্পর্কে মন্তব্য প্রসঙ্গে এমনটাই বললেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। তাঁর বক্তব্য, পুরস্কারের নাম কি, আদৌ পুরস্কার পেয়েছেন কি না, তা দিয়ে অমর্ত্য সেনের মহিমা, তাঁর সম্মান ব্যাখ্যা করা যায় না। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘অমর্ত্য সেন নোবেল পুরস্কার পাননি। উনি নোবেল লরিয়েট নন। নিজেকে নোবেল লরিয়েট বলে দাবি করেন।’ এই মন্তব্যের ব্যাখ্য়াও দিয়েছেন উপাচার্য। তিনি উল্লেখ করেছেন, অর্থনীতির নোবেল পুরস্কারের নাম মূল নোবেল পুরস্কারের (Nobel Prize) থেকে পৃথক। উপাচার্যের সেই মন্তব্য থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।
এই প্রসঙ্গে পবিত্র সরকার বলেন, ‘একটা নামেরই ব্যাপার। এটা সত্যি যে আলফ্রেড নোবেল যে পাঁচ বিষয়ের জন্য পুরস্কারের টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে অর্থনীতি ছিল না। কিন্তু নোবেল কমিটিই তো এই পুরস্কার তাঁকে দিয়েছে।’ সেই সঙ্গে শিক্ষাবিদ আরও বলেন, ‘যদি ধরা যায় অমর্ত্য সেন পুরস্কার পাননি, তাহলেও তিনি তো হার্ভার্ড, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন দীর্ঘদিন। অর্থনীতিবিদ হিসেবে সারা বিশ্বে তাঁর সম্মান রয়েছে। বিদ্যুৎ বাবু কি সেই সম্মান মিথ্যা প্রমাণ করতে পারবেন? প্রমাণ করতে পারবেন, হার্ভার্ড বা কেমব্রিজ তাঁকে ডাকেনি?’
শিক্ষাবিদের স্পষ্ট বক্তব্য, পুরস্কারের নাম দিয়ে অমর্ত্য সেনের মহিমা ক্ষুণ্ণ হয় না। ঠিক যেমন নোবেল না পেলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গরিমা ক্ষুণ্ণ হত না। একজন উপাচার্য হিসেবে এমন মন্তব্য তাঁর নিজের প্রতি অসম্মান বলেও মনে করেন পবিত্র সরকার।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মন্তব্য নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখন সে কথা শুনে হেসেই ফেললেন অমর্ত্য সেন। উপাচার্যের মন্তব্যের কথা শুনে সাংবাদিকদের সামনে তাঁর একগাল হাসি। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার আর কিছুই বলার নেই।’